ভেসে এসেছি হয়তো জলের স্রোতে,
পাখির ওষ্ঠাগত হয়েও আসতে পারি,
স্থান হয় বৃক্ষের কোঠরি বা মগডালে,
বাড়ির ছাঁদে কিংবা শ্যাওলার পঁচায়।
পৃথিবীর আলোতে মেলি শাখার পত্র,
প্রতিকূলতায় উড়ে যাই কি'বা ভেসে,
ক্ষুধার্ত পশু-পাখিরাদেরও খাবার হই,
আগাছা ভেবে উপড়ে ফেলে দেয় কেউ।
বাঁচার তাগিদে শেকড় প্রসারিত করি,
শাখা, মাটি কিংবা শক্ত কংক্রিট হউক!
শত প্রতিকূলতার মাঝেও বেড়ে উঠি,
কখনো ভেঙ্গে দেয় ডাল কিংবা পাতা,
ছিন্নভিন্ন হয়ে তবুও বাঁচার স্বপ্ন দেখি!
সূর্যের তাপে শীতল ছায়া দিবো বলে,
দুপুরে ক্লান্ত পথচারীর আশ্রয় হবো বলে,
পশুপাখির খাদ্য ও বাসস্থান হবো বলে।
ঝড় বৃষ্টিতে প্রবল বাতাস আমায় ভাঙ্গে,
আমাকে ভাসায় কিংবা অতলে ডুবায়,
ক্ষতবিক্ষত হয়েও আমি ঘরবাড়ি বাঁচাই,
আমার শাখায় আশ্রয় নেয় জীবজন্তুরা।
আমি তাপে পুড়ে ছারখার হয়ে যা-ই,
কখনো হই বাচ্চাদের খেলার সাথী,
রাখাল আর কৃষকেরা শেকড়ে ঘুমায়,
কেউ অবসরে আমার ছায়ায় বিশ্রাম নেয়,
প্রেমিক-প্রেমিকার নির্জন ছায়াচ্ছন্ন স্থান আমি -
বিনিময়ে তারা গায়ে চিরে রেখে যায় স্মৃতি,
কারোর নাম,কারোর কষ্ট বা সুখের সংকেত।
আমার সাদা রক্তের বেদনা তার বুঝে না।
ক্রমান্বয়ে শাখাগুলো ছড়িয়ে বেড়ে উঠি আমি,
কখনো ঝড়ের কবলে পরে আমার মৃত্যু হয়,
আমাকে চিড়ে বানানো হয় আসবাবের কাঠ,
কিংবা ঢুকিয়ে দেওয়া হয় জ্বালানো অগ্নিকুন্ডে,
আমার দেহের কার্বন গ্রহণ করে অন্য বৃক্ষেরা।
আবার ছায়া, ফল, কাঠ, লাকড়ি বা আসবাব,
এভাবে অগণিত বছর ধরে পৃথিবীতে যাতায়াত।