তুমি অভিমান, অনুযোগ, অনুরাগ
তুমি স্নেহ, প্রীতি, প্রেম ও পরাগ।
তুমি প্রথম স্পর্শ, কেঁপে ওঠা রাত
তুমি কিশোরীর রাঙা প্রভাত।
তুমি চলনবিল, শালুক, শাপলার ফুল
তুমি সন্ধ্যামালতী, শিউলি, বেলী, বকুল।
তুমি রাখালের-বাঁশী, সকাল গড়িয়ে দুপুর
তুমি গোধূলিলগন, অষ্টপ্রহর, গুনগুন মধুর।
তুমি শামুকের ধীর পায়ে চলা,
তুমি মুক্তার-সুখ, ঝিনুক-মালা।
তুমি জলদিঘি, পদ্মনীল,
তুমি ছায়ালোক, মুক্ত-শঙ্খচিল।
তুমি ধূপ-সুগন্ধী, বাসরের প্রথম-রজনী
তুমি অভিসন্ধি, বিনয়াবনত কামিনী।
তুমি নববধূর প্রথম-চাহনি, লজ্জাবতী, রাঙা-মুখ
তুমি রাতরাণী, চম্পা, হাসনাহেনা প্রমুখ।
তুমি আকাশনীল, ভেসে যাওয়া সাদা মেঘ
তুমি অলিখিত কবিতায় কবির কাব্য আবেগ।
তুমি রংধনুর সাত খেল, ইন্দুবালা
তুমি সূর্য-কিরণ, কুমারীর হিরণমালা।
তুমি পুতুলের বিয়ে, শৈশবের বায়না
তুমি বয়ঃসন্ধি, প্রথম দেখা আয়না।
তুমি প্রথম-প্রেম, অনুভূতি, ছোঁয়া
তুমি অরণ্য, বটবৃক্ষ, শ্যামল-ছায়া।
তুমি কাঠপোড়া রোদ্দুরে কৃষাণের কণ্ঠে গান
তুমি ভেজা চুলে বসে থাকা কৃষাণীর অভিমান।
তুমি আষাঢ়, কিশোরের ভেলা বাওয়া সেই ক্ষণ
তুমি শরৎ, কিশোরীর কাশফুলে ছুটে চলা সেই মন।
তুমি নার্গিস ও প্রমীলা, মৃণালিনী,
তুমি বনলতা সেন, আসমানী।
তুমি অগ্নি-বীণা, রূপসী বাংলা,
তুমি নকশী কাঁথার মাঠ, গীতাঞ্জলি।
তুমি স্বর্গ, তুমি মর্ত্য, তুমি দেবী, তুমি অপ্সরী
তোমার তরে সঁপিয়াছি মোর প্রেমাঞ্জলি।