সব অভিমান গাঁথিয়া রাখ মেঘ কালো কবরীতে,
শাওন-রাতে ভাঙাব মান শিউলি ফোটা রজনীতে।

গ্রন্থিয়া রাখ প্রতীক্ষার-প্রহর ঐ তাঁতের-শাড়িতে,
জাগিব তবে শিয়রে-নিশীথে খড়ের-বাড়িতে।

জমায়ে রাখ চঞ্চুদ্বয়ে তিয়াসী-প্রণয়-বাসনা,
শাঙন-রাতে আলিঙ্গনে পড়াব কণ্ঠে হাসনাহেনা।

পুষ্প-আস্তরণে বুলায়ও আঙুল উদাসীন-প্রাণে,
দীঘলকেশ, উড়াইব বেশ, দক্ষিণের-বাতায়নে।

বসন-ভাঁজে রাখিও প্রণয় লুকায়ে সিঁথিতে,
ঝিকিমিকি করিবে জোনাক প্রণয়ের গীতিতে।

অভিমানে নিশি জাগিয়া প্রিয় লেখিও প্রণয়পত্র,
দোলন-চাঁপার ব্যাকুল গন্ধে জড়াব তোমায় মিত্র।

আঁকিয়া রাখ প্রণয়-স্মৃতি ঐ কাজল-আঁখিতে,
স্মরণে আসিব ক্ষণে-অক্ষণে সোহাগে মাখিতে।

বঁধুয়া দৃষ্টি বহুদূর চাহিয়া খসিয়া পড়িছে আঁচল?
নয়নে ঝরিছে জলদ-বারি ভেজায়ে হৃদ-অঞ্চল?

পাণির-কাঁকন ভাঙিয়া গিয়াছে নিশীথে মোরে খুঁজে?
সখী,শূন্য-শয্যায় ডাকিয়াছ কি আপনার নয়ন বুজে?

সখী, শ্রাবণ-অবসরে আসিব নীড়ে হারাব নীপ-বনে,
ফুটিবে কুসুম, ভাঙিবে মান, ঝরিবে বারি ক্ষণে ক্ষণে।