দাহিয়াতুল কালবী এসে বলে হে রাসূল
বুকে মোর শত কষ্ট হয়েছে জমা,
আমি যদি তওবা করি প্রভু কি আমাকে
করে দিবেন ক্ষমা?
সত্তরটা শিশু জীবন্ত দাপন করেছি
আমার পাপের নেই শেষ,
তাহার চেয়ে বড় পাপ করেছি আমি
নিজের মেয়ের কাহিনী করতেছি পেশ।
এক মেয়ে শিশুর জন্ম দিয়েছিলাম আমি
বিবি আমার ভয়ে করেছে গোপন,
মোর তরে সন্দেশ এল মৃত শিশু জন্মেছে
রাতের আঁধারে তারা দিয়েছে দাপন।
অলিক সমাচার ছিল তাহা আসলে
নানার বাড়ি কন্যাটি মোর হচ্ছিল বড়,
ছয় সাত বছর পর একটি মেয়ে এনে
মোর বিবি বলে তাহাকে একটু ধর।
আহা! আহা কত সুন্দর ছিল মুখ খানি তার
কত না সুন্দর ছিল তাহার চুল,
যদি বলি রুপ নগরের রাজ কন্যা
আমার একটুও হবেনা ভুল।
দিন গড়িয়ে যেতেই আমি জানতে পারি
সে যে আমারি মেয়ে,
কত সুন্দর ছিল তাহার হাসি
আমি দেখতাম শুধু ছেয়ে।
কত চুমু দিত কত আদর করিয়া
বলত আমায় বাপ,
বিবেকহীন মোর অন্তরে জেগে উঠে বলে
কন্যা সন্তান হল মহাপাপ।
একদিন সাজায়ে তাহারে কহিলাম বিবিরে
যাচ্ছি মোরা তোমার বাপের বাড়ি,
কন্যাটি মোর কুলে উঠিয়া আধর করিয়া
টানছে আমার দাড়ি।
হাঁটতে হাঁটতে মোরা যখন বাড়ি হতে
পৌছিলাম অনেক দূরে,
কন্যাটি কহিল নানার বাড়ি বাবা অন্য পথে
তুমি কোথায় নিয়ে যাচ্ছ মোরে।
বড় একটি খন্দক দেখিয়া দাড়ালাম যখন
তাহারি দ্বারে,
মেয়েটি মোর বুঝিতে পারিয়া পা দুটি ধরে
মের না মোরে বলে কাঁদছে বারে বারে।
ফুটন্ত গোলাপটি মোর চুপটি মেরে অশ্রুশিক্ত
নয়নে কহিল ওহে মোর বাপ,
আমি যদি কভু তোমায় কষ্ট দিয়ে থাকি দয়াকরে
আমাকে করে দাও মাফ।
তোমাকে কভু বাপ বলে ডাকবনা চলে
যাব বহু দূরে,
আমারি জন্য অপমান হতে হবে না কভু
ক্ষমা কর মোরে।
পাষন্ড হ্রদয় শুনলনা সে আত্মচিৎকার
ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিল সে গর্তে,
প্রকান্ড একটি পাথরে চাপা দিয়ে নিভিয়ে
দিল জীবন প্রদীপ একমুহূর্তে।
চারদিকে দিকে একটাই ছিৎকার আসমান
জমিন যেন হয়ে গেছে ভারি,
আমায় মের না বাবা আমি চলে যাব বহুদূর
তোমাদের ছাড়ি।
কাঁদে রাসূল কাঁদে সাহাবি সবাই কেঁদে
ভাসায় যে বুক,
কেমন পাষন্ড পিতা তুমি তোমার দিলে একটুও
আসেনি দুখ।
অশ্রুশিক্ত নয়ন যোগলে কহিলেন রাসূল শুন
তুমি করেছ যে মহাপাপ,
রাহমান তিনি তাহার কাছে আত্মসমর্পণ করলে
সকল গোনাহ পেয়ে যাবে মাপ।
এত বড় পাপের যদি হয় ক্ষমা নিরাশ হইয়না
দুই হাত তুলে বল হে আমার রব
জীবনের সূচনা থেকে আজ অবধি যত পাপ করেছি
ক্ষমা করে দাও সব।
রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু।