অদ্য এই বিশাল জনসভায় কবিতার অর্থ উন্মোচন করছি। কবিতা কেবল কবির নয়। ইহা - সভ্যতা, সময়, প্রকৃতি ও জনতার।
শ্রমিকের প্রতিটি ঘামের ফোঁটা কবিতা-
যদি তা লিখা হয় করুণ শব্দে।
মিছিলের প্রতিটা কদম কবিতা -
যদি তা বিদ্রোহীর বীণায় বাজে।
বৃদ্ধাশ্রমের প্রতিটা প্রহর কবিতা -
ট্রাজিডির আলোচ্য পটে।
সময়ের প্রতিটা অসঙ্গতি কবিতা -
যদি কবির বিবেকে কম্পন ঘটে।
শাসকের প্রতিটা পদক্ষেপ কবিতা -
যদি রাজপথ রক্তে রঞ্জিত হয়।
সভ্যতার প্রতিটা নিঃশ্বাস কবিতা -
যদি নবজাতক কথা কয়।
প্রেমিকার প্রতিটা চুল কবিতা -
যদি তা প্রেমিককে বেঁধে রাখে।
প্রেমিকের প্রতিটা চাহনি কবিতা -
যদি তা প্রেমিকাকে মোহিত করে।
কলমের প্রতিটা কালির ফোঁটা কবিতা -
যদি তা নিদ্রিত জাতিকে জাগিয়ে তুলে।
জনজীবনের নিত্য আর্তনাদ কবিতা -
তা জাতির স্বাধীনতা এলে দিলে।
রজনীর প্রতিটা জোনাকির ক্ষীণ আলো কবিতা -
যদি তা পথিককে পথের দিশা জানায়।
সিন্ধুর প্রতিটা হিন্দোল কবিতা -
যদি তা সাহস-শৌর্য বয়ে বেড়ায়।
নেতার দেয়া প্রতিটা ভাষণ কবিতা -
যদি তা নাগরিকের কল্যাণ সাধন করে।
শিক্ষকের বলা প্রতিটা শব্দ কবিতা -
যদি তা সিঞ্চিত হয় অলস মস্তিষ্কের পরে।
বিজ্ঞানীর প্রতিটা আবিষ্কার কবিতা -
যদি তা শক্তি ও সময়ের সমন্বয় ঘটায়।
উদ্ভাবকের প্রতিটা প্রচেষ্টা কবিতা -
যদি তা চাহিদার ঊর্ধ্বে প্রাচুর্য রটায়।
ঝড়ে পড়া প্রতিটা শুকনো-পত্র কবিতা -
তা যদি প্রতিদানের প্রতীক বহন করে।
বৃষ্টির প্রতিটা ফোঁটা কবিতা -
তা যদি মাটির ক্রন্দনে ঝড়ে।
মাতৃ-হাতের প্রতিটা অন্নের দানা কবিতা -
যদি সে-মমতার মর্ম সন্তান জানে।
পিতৃের প্রতিটা 'বাবা ডাক' কবিতা -
যদি সন্তান সে গুরুত্ব মানে।
ফেলে আসা প্রতিটা সময় কবিতা -
তা যদি বর্তমান সৃষ্টি করে।
আমার আমি সেও কবিতা -
যদি হৃদয় তারে ধরে।
হাসি-কান্না-দুঃখ অভিধানও কবিতা -
যদি তা জীবনের মানে প্রবর্তন করে।
"কবিতা" শব্দটিও কবিতা -
যদি তা বিপ্লব ব্যাপিত করে।।