কামুক সময়ের দীঘল বিকেল
লম্বা হয়ে যায় ক্রমশঃ
সূর্যটাও রক্ত মেখে শরীরে
নষ্ট জানালায় ঝুলে পড়ে
স্বপ্নে তাড়িত বলাকারা ঝাঁক বেঁধে
ডানা মেলে উড়ে আসে পূবালী প্রবাসে
এদিকে কোথাও যদি সূর্যোদয় ঘটে
ঋষিজ পৃথিবী আবার যদি আলোকিত হয়ে ওঠে।
তার বুকে আশ্রিত মানুষেরা
অধিবাসে আশ্রয় খোঁজে
দরজার পাট বন্ধ হয়ে যায় সব
বিস্তর পিদিম জ্বলে ওঠে বিস্তৃত দিগন্তে
কারণ সূর্যটা কখন অস্তাচলে চ'লে গেছে
পৃথিবীর ওপাশে ঢাকা প’ড়ে গেছে সে
এক রাত্রির ছুটি নিয়ে।
স্বপ্ন দেখা মানুষের জন্য কখনও কখনও
অপরাধ বলেই গণ্য হয়।
কথায় বলে, মানুষ স্বপ্নচারী।
আবার এও ঠিক। দূরাচারীও বটে মানুষ।
একই স্বপ্ন ও দূরাচারের সঙ্গমে
মানুষের স্বপ্নময় সময় নষ্ট হয়ে যায়
হারিয়ে যায় কালের অতল গহীনে।
তবে কি স্বপ্নবিমুখ হয়ে থাকবে
বিপুলা এ পৃথিবীর পান্থজনেরা?
যে বলাকারা উড়ে যায়,
উড়ে যায় সূর্যোদয়ের প্রত্যাশায় অন্য দিগন্তে
কামুক বিহ্বল বিকেল সে তো
গোধূলির নিঃশ্বাসে লোপাট হয়ে গেছে কখন!
মানুষগুলো শরীর পাতে শক্ত তক্তপোষে
নির্ঘুম রাত্রির একপেশে ছুটি নিয়ে
পরিশ্রান্ত বিভব ঝেড়ে তাই
স্বপ্নবিলাসে মত্ত হয়। সঙ্গমে লিপ্ত হয়ে
কামুক সময়ে সমর্পিত হয়
প্রলম্বিত যামিনীবাসে আদিমরসে সিক্ত হয়।
আগামী সকালের শুরুটা যদি
নূতন সূর্যোদয়ের উৎসবে মেতে ওঠে আবার
তক্তপোষে ঘেমে নেয়ে রক্তাক্ত হয়
রক্তের বিশ্রী সোঁদা গন্ধ তামাটে হয়
টুকরো টুকরো লোহিত কণিকা
ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে দূরারোগ্য অমানিশায়।
ভোরের আলো ফুটবে কিনা
তার নিশ্চয়তার প্রশ্বাসে
তাড়িত হয় নিশাচর প্রাণীকূল। ডানা ঝাঁপটায়,
স্বপ্নের পৃষ্ঠা উল্টায় বিলাসী পেঁচা।
তো থাকো না রাত্রি আরও গোটা দু’টা দিন
স্বপ্ন দেখি মানুষের বিবরে
শুকনো শকুন কীভাবে আঁচড় কাটে
নিরাপদ দূরত্বে বিভাজিত হয়ে।’
এদিকে নারী পুরুষ আবাদি বিলি কাটে পরস্পর
ইনিয়ে বিনিয়ে বানানো স্বপ্ন বপন করে নিরন্তর
উর্বর ভূমিতে জৈব প্রক্রিয়া চালিত হয়
পূর্ববর্তী সূর্যোদয়ে আরও একটি সম্ভাবনাময় দিনের
সূত্রপাত করবে ব'লে।
আর নতুন উদ্যমে খুব সকালেই তখন
লাঙলের ফলারা ঋতুমতী জমির
উর্বরাক্রমে নিকষিত হবে।
তখন তাগড়া পেশীবহুল বলদেরা টেনে যাবে
সেই লাঙলের ফলা
কাঁধে মাহাল বাঁশের জোঁয়ালের নিচে
সমর্পিত হয়ে।