আমি যেখানে ব’সে লিখি প্রায়ই,
সামনে ধবধবে দেয়ালে দেখি অপরিচিত মানচিত্র।
কোথায় কোন তুষারপাতের দেশে তুমি,
আমার বাংলার শ্যামলিমা নিয়ে বরফ খেল।
বাঙালি শরীরে ওভারকোট জড়িয়ে পার্টটাইমে যাও;
অতীতের সেই গ্রামকে খুঁজে ফির প্রাসাদের কার্নিশে।
কখনও সখ করে টেবিলে ভাত নিয়ে ব’সে আঙ্গুল চালিয়ে,
গ্রাস তুলে নাও মুখে; বাংলার কৃষাণীকে মনে ক’রে।
তোমাদের ওখানে যখন বসন্ত ফোটে বাগানে,
তখন কি মনে পড়ে তোমার; রমনার কৃষ্ণচূড়ার কথা?
বেলী ফুলের মালা? কিংবা এই আমাদের কথা?
তোমরা চিতই, পাটিসাপটা ভেঁজে কি বড়দিন কর?
বাংলা নববর্ষকে কি সতেজ রাখো ওখানে রবীন্দ্রসঙ্গীতে?
তো, বাংলাবই টেবিলে রেখে ভাবো; বেশ তো বাঙালি আছি!
বাণীদীপ্তির বাংলা ক্যাসেট শোনাও
অলস ভ’রে বিদেশী বান্ধবকে
দামি প্যাডে চিঠি লিখ আজ পল্লীর এই আমাকে।
কৃত্রিমতাকে আঁকড়ে কেন নিষ্ঠুর হও, হে বাঙালি!
তোমরা কি পারো না ওখানে আরেক বাংলাদেশ গড়তে?
বাংলার ঐতিহ্যকে তু’লে ধরতে অপরিচিত মানচিত্রে?
যদি চাও তো লিখো। আমি বঙ্গাব্দকে পাঠিয়ে দেবো;
কুঁড়েঘর, পদ্মানদীর মাঝি, এই ধানখেত, ক্ষুধার্ত জনতা,
নির্বিশেষে এই মাটিতে গড়া আমার বুকের হাড়
সব তোমাদের কাছে।