একজন কবির অনুপস্থিতিতে
কে করে তার কবিতা পাঠ?
জনসম্মুখে দাঁড়িয়ে দরাজ কণ্ঠে
শাণিত শব্দমালা উচ্চারিত হয়,
‘ভালোবাসা নয়। একমাত্র কবিতাই
আমার শেষ আশ্রয়! কে আমাকে
ভালোবাসে? কে বাসে না।
কেহ বাসবে কি বাসবে না ভালো
অত কিছু তলিয়ে দেখি না আমি।
তাছাড়া ও সমস্ত ভালো বাসা না বাসার
নিখুঁত হিসাব করার তত সুযোগ ও সময়
কোথায় আমার?’
কোথায় আমার সেই আয়তন?
একজন কবির কণ্ঠেই উচ্চারিত হতো
দহনকালের শব্দমালা। কিন্তু অনিবার্য কারণে
এখন তা আর হচ্ছে না। আর হবে কিনা
তাও নিশ্চিত হওয়া যায়নি এ যাবত।
তো একজন কবির অনুপস্থিতে
যে করে তার কবিতা পাঠ
উপস্থিত সকলে ভেবেই নিয়েছে
আপাত দৃষ্টিতে সেই আজ
সোচ্চারিত কবি। তাদের সকলের ইচ্ছা,
কবি তুমি তোমার মেরুদণ্ড সোজা করে
দরাজ কণ্ঠে উচ্চারণ করেই যাও
জ্বালাময়ী সব শব্দগুচ্ছ। তোমার অবয়বেই
জীবন্ত হয়ে উঠুক সেই কবি।
ওদিকে আসরে চাপা গুঞ্জন উঠেছে,
কবির ময়নাতদন্ত হচ্ছে এখন লাশকাটা ঘরে।
কবি তো ফিরে আসবে না আর কখনও
তার কবিতাপাঠের আসরে?
কবি তো সোজা কফিনবন্দি হয়ে চলে যাবে আজিমপুরে?
তার শেষ জায়গা হবে না সেখানে,
যেখানে সমস্ত বুদ্ধিজীবিরা ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে
বুদ্ধিচর্চা নিয়ে মহাব্যস্ত। এমনকি লীগ আর দল নিয়ে
তাদের জাতীয়তা নিয়ে কুরুক্ষেত্রে
পরিণত করে তুলেছে একটুকরো মিরপুরকে।
উপস্থিত কেহ কেহ বুক চাপড়ে হাহাকার করছে,
হায় কবি! তুমি ভালোবাসা নয়,
একমাত্র কবিতাকেই চূড়ান্ত আশ্রয় মনে করেছিলে।
দেখি তোমার সুরতহাল প্রতিবেদনে কী আসে!
আমরা এখানে আছি সেই প্রতীক্ষায়।
তুমি চিরজীবী হও কবি!