[বীর মুক্তিযোদ্ধা চিত্ত ফ্রান্সিস রিবেরূকে সামনে রেখে]


বাধা যত পিছনে ফেলে
অন্ধকারে হাতড়ে ত্রস্তপদে
এগিয়ে এলাম।
অতীতে কী ছিলাম।
এবং বিনিময়ে কী পেলাম।
সে সমস্ত এখন কিছুই ভাবছি না।
এ সময় চোখ মেলে শুধুই দেখি
সামনে সমূহ জমাট আঁধার!
সীমাহীন ঘুটঘুটে আঁধার!
ভাবছি, এখনও তো বেঁচে আছি!
এখনও পারছি এগিয়ে যেতে।
এখনও তো পা সোজা করে দাঁড়াতে পারছি।


সামনে আমার রয়েছে মোমের সলতে
দেশলাই হাতে এগিয়ে আমাকে যেতেই হবে।
যা আছে প্রাণহীন সলতে, তাতে জীবনের সাড়া
জাগাতে হবে আবার। দিতে হবে আবার
প্রজ্বলনের স্পন্দন। স্থবির হয়ে থাকা নয় আর।
মৃতের মত কবরের অন্ধকারে শুয়ে থাকা আর নয়।
জাগতেই হবে আবার। উঠে দাঁড়াতেই হবে।
হাত পা সচল করে চলতেই হবে সামনের দিকে।
এইতো আমি আছি সামনে। আমার সাথে,
আমার পাশে এবং আমার পিছনে অনুগত অনেকেই।
তারা সবাই আমার প্রজন্মের, আমার রক্তের উত্তরসূরি।
এখন বলতে গেলে সকলেই আমরা
আঁধারের যাত্রী। সামনে দেখি সীমাহীন দুঃস্বপ্নের রাত্রি!
সামনে কেবলই দীর্ঘশ্বাস! চাপা কান্না!
শুধুই গুমরে গুমরে মৃত্যুর প্রহর অতিক্রম করার চিত্র!


না। আর নয়। এই তো। আমার হাতের দেশলাইয়ের কাঠিতে
জ্বালিয়েছি আগুন! আমার সামনে যত আছে মোমের নির্জীব সলতে
তাতে আমি প্রাণের স্পন্দন জ্বালিয়ে দিচ্ছি!
এগিয়ে এসো সকলে। আমরা এগিয়ে যাই মোমের শিখায়।
এ শিখা জীবনের আগুন! আমাদের মুক্তির শপথের প্রতীক।
আমাদের স্বাধীনতা! আমাদের জাতীয়তা!
লাখ শহীদের প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত
আমাদের সার্বভৌম মাতৃভূমি।
আমাদের জাতীয়তা।
আমাদের জাতীয় সঙ্গীত!


কোন কিছুকেই মলিন হতে দেব না আমরা!
সামনে যতই আসুক ঝড়! আসুক দুর্বিপাক!
প্রয়োজনে আবার ঝাঁপিয়ে পড়ার শপথে হই বলিয়ান।
এ সময় জ্বালিয়ে দেই। জ্বালিয়ে দেই শিখা অনির্বাণ!
এ শিখা জ্বলুক! জ্বলে উঠুক অন্তরে অন্তরে!
জ্বালিয়ে দিলাম শিখা অনির্বাণ!