আমি সমান্তরাল রেলের উপর দাঁড়িয়ে ঠায়
অনাবিল কবিতা আবৃতি করি –
স্বয়ম্ভু একটানা শ্রুতিমধুর লিরিকে। জীবনে আমার
এখন শুধুই ছুটে চলা স্টেশনের পর স্টেশন।
শেষ হয়না আবৃতির আওয়াজ আর
একে একে শব্দের দূরত্বে বিস্তৃত শান্তিময় দ্যোতনা!
আহা শূন্যতার ঝোপঝাড়ে আছড়ে পড়ে
পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা ন’ড়ে ন’ড়ে।
আমি কবে কাকে বলেছিলাম-
‘তোমার জন্য কবি হবো’?
শব্দের পঙক্তিতে আমার অসংখ্য প্রবীর চেতনা
নাটকীয় ভঙ্গীতে ফোঁটা ফোঁটা খসে পড়ে
যেন ভরা যৌবনে টসটসে লেটুস অধরে- !
আমি কবে তার গ্রীবায় হাত রেখেছিলাম।
বলেছিলাম, ‘তুমি আমার স্বপ্নের ট্রেন হয়ো।
আমার কবিতায় মূর্ছনা তুলো.........
পর জনমেও তুমি আমারই হয়ো।’
শব্দ ভাঙার পরিশ্রমে যার
তীব্র ঘামের ঝাঁঝালো নোনা স্বাদ
ও উৎকট গন্ধে স্পৃহা জাগে
জৈবিক পাথরে পাথর ঘষে
আগুন জ্বালার প্রসূতি হতে
তুমি তাকে অনায়াসে কমলার খোসার মতো
খুলে ফেললে!
বাকীটুকু আর ভাবলে না!
তবুও যখন শিস দিয়ে
উদগ্রীব এ দেহ নিয়ে
সিঁড়ি ভেঙ্গে উঠে যাই
মনে হয়, মিলন সেতো শরীরী কেবল
সেখানে বিচ্ছেদের ভয় অনেক।
তার চেয়ে সমান্তরাল রেলের উপর
পাশাপাশি পা ফেলে
পটভূমিতে দাগ রেখে এগিয়ে যাই
কখনও তো মিলবে তোমার আমার শেষ ঠিকানা।
তখন শুধুই বলবো,
‘এই যে আমি-
এখন তোমার সামনে দেখ
অনাবিল পৃষ্ঠায় কেমন দাঁড়িয়ে আছে
সেই তোমার মানুষটি
কেমন সুনসান সৌন্দর্যে !