কালের শেকড় থেকে অঙ্কুর যেমন
মাটি ফুঁড়ে জেগে ওঠে । ক্রমশঃ জেগে ওঠে
তেমনই ঠিক মানুষের সভ্যতার গর্ভ চিরে,
মানবধর্ম তাঁর মাথার ওপরে তুলে ধ'রে
একজন মানুষ - কবি হয়ে ওঠেন নির্বিবাদে।
তাঁর চোখে শতাব্দীর সূর্যোদয় বিম্বিত হয় -
তিনি দিব্য দৃষ্টিতে জাগতিক - প্রাগৈতিহাসিক
সমস্ত সময় বিশ্লেষণ করেন অনায়াসে।
একজন কবি, তখন দেশ জাতি সব
সীমারেখা টপকে গিয়ে বস্তুত
সকলের সামনে দাঁড়িয়ে হয়ে ওঠেন
সময়ের প্রধান কবি।
কবি, তাঁর কবিতায় তু'লে ধরেন
প্রকৃত সত্য। মিথ্যার অনাবাদি জঙ্গলময়
মৃত্তিকাতে সযত্নে আঙুল ভেঙ্গে
উর্বরা পরশে এঁকে দেন তিনি
পলিময় এক সবুজ দিগন্ত।
সেখানে মেঘের উপমা,
সূর্য কিরণের উৎপ্রেক্ষা ইত্যাদি
বাঙময় হয়ে ওঠে। মৌসুমির প্রবল জোয়ারে
তখন মুমূর্ষু প্রাণেরা জেগে ওঠে-
আর তিনি কবি, তাঁর কবিতার ব্যঞ্জনায়
মাতিয়ে তোলেন বিশ্ব মহাবিশ্বকে।
একজন প্রধান কবি
আগুনে ঝলসে ঝলসে
ধাতু যেমন খাঁটি সোনা হয়ে ওঠে-
ঠিক তেমনই পরীক্ষিত হতে হতে
সর্বজনীন হয়ে ওঠেন তিনি।
কালের গভীরে একজন কবি সাঁতরে সাঁতরে
অবিসংবাদিত প্রবক্তার মতো
ওপরে উঠে আসেন ঠিক এমনই ক'রে।
হয়ে ওঠেন যুগের প্রয়োজনে,
অত্যন্ত জরুরি এক ঋষি-মানব চরিত্র।
তাই একজন প্রধান কবি ব্যতিত-
কোন সময়ই ধ'রে রাখতে পারে না
তার সভ্যতাকে ।