আজ যদি লেখনী বন্ধ হয়ে যায় আমার
তবে সমস্ত কিছুই থেমে যাবে এ জগতের।
ঠিক যেমন, মরানদী প’ড়ে থাকে স্রোতবিহীন।
তেমনই এই আমার জগত;
চিরতরে নিথর হয়ে যাবে।
একেবারে স্তব্ধ। নিশ্চল।
আমার কাব্য যখন পূর্ণতা-প্রাপ্তির পথে এসে দাঁড়ায়,
তখন কেন যেন তার উন্মেষ বিলম্বিত হয়!
আমি তখন বুঝতে পারি, কী যেন কেবলই অধরা থেকে যায়
আমার কাব্য জুড়ে। আমি কায়মনে তখন তোমাকেই ডাকি,
‘হে কাব্যলক্ষ্মী, তুমি সাড়া দাও! তুমি স্পর্শ দাও!
আমার নিজস্ব পঙক্তিতে; তোমার সরব উপস্থিতি জানান দাও।’

তারপর দেখি! কী এক নিশ্ছিদ্র অমিয় ঘোরের মাঝে,
আমার সমূহ অনুভবে, কাব্যের দেবী তুমি এসে সাড়া জাগাও।  

তখন! আর তখনই আমি সত্তা নিয়ে ঘুরে দাঁড়াই।
আমি অনুভব করি, আমার লেখনী এক ভিন্ন মাত্রা পায়!
আমি আমার নিজস্ব অক্ষে, সৃজনী প্রত্যয় নিয়ে
গতি নিয়ে আবার ফিরে ফিরে আসি, আমার কাব্য-ভুবনে!

আমি বাস্তবিক অনুভব করি। কবিতা আমার;
তার স্তবকে স্তবকে নির্বিবাদে তোমার কথাই বলে। আর তাই,
হারিয়ে যাওয়ার প্রবল ঝড়ের তীব্রতার মাঝেও
আমার হাতের আঙুলগুলো তাই এখনও সচল আছে
আমার মনন এখনও সজীব আছে,
শুধু একজনের কারণেই। সে কেবল তুমি। তুমি আছ ব’লেই।

এবং সে আমার কাব্যলক্ষ্মী, তুমি আছ ব’লেই। তাই,
আজকের দিনের এই উদ্বোধনী-বেলায় নবোদিত সূর্যের
নবীন আলোয়, তোমাকে অভিনন্দন! তুমি চির অম্লান হয়ে থাকো
এই আমার কবি-মানসে! যতদিন কায়ক্লেশে বেঁচেবর্তে থাকি।
যতদিন কাব্যের জানালা খুলে সাজাই শব্দের প্রতিমা।
ততদিন থাকো। আমারই পাশে। এই আমারই সাহচর্যে।