চোঁয়াল ঝুলে পড়েছে বয়সের ভারে,
পুরু চশমার আড়ালে কোটরে বসা
চোখ দুটো আজ বড্ড ফ্যাঁকাসে;
মেদহীন চামড়ার ভাঁজে ভাঁজে—
মিছেমিছি নির্মল আবেগ লুকিয়ে,
বার্ধক্য ঢেউ খেলে যায় আপন মনে;
সফেদ কাশফুলের মত গুচ্ছ চুলগুলো,
তেল,পানির আদুরে পরশ পায়না বহুদিন।
তে'পায়া খাটের নিচে জং ধরা ট্রাঙ্কে,
যক্ষের ধনের মত আগলে রেখেছে,
অমলিন হাসিমাখা প্রিয়মুখের ছবিটি;
রাত গভীরে স্ব-শরীরে ছবির মানুষটি
যেন বেরিয়ে এসে শোয় বুকের 'পরে,
প্রশ্ন করে- "আমায় ছেঁড়ে ঘুম আসে তো মা?"
হাত বুলিয়ে মাথায় ম্লান হেসে প্রলাপ বকে,
"বাবা, শুধু শুধু চিন্তা করিস আমার জন্যে,
তোর পাশে দেখ না, নিশ্চিন্তে ঘুমায় বৌমা।
এখানে ঢের ভালো আছি—
পাশের সঙ্গীজন আমার খুব যত্ন করে,
ঘুম না এলে চোখে রাজকুমারের গল্প শোনায়,
যেমন শুনিয়েছিলাম তোকে খুব ছোট্ট বেলায়।
খোকা—
যদি কখনও খবর পাস আমার মরনের পরে,
কষ্ট হলেও মাথা নুইয়ে ঢুকিস স্যাঁতস্যাঁতে ঘরে,
একটা ছোট্র ট্রাঙ্কে তোর জন্য জমা আছে
কালো অক্ষরের কিছু মমতা আর
খুব তুচ্ছ অথচ আমার শ্রেষ্ঠ এক ভালোবাসা!
(বৃদ্ধাশ্রমের সকল মা'য়ের চরণে উৎসর্গ করে লেখা, ভালো থাকুক মা'য়েরা)