অলস, আঁতেল, বই পোকা
এই বাঙালির সৃষ্টি হেথা।
থাকতো বাস্তব থেকে দূরে
আর কল্পনায় বেড়াত ঘুরে।

চোর বলে ছিল না বদনাম
ছিল আদর্শবাদী নিয়ে আত্মাভিমান।
বিশ্বজগত নিয়েছিল মেনে তাই;
ছিল বঙ্কিম রবি বিবেকানন্দ ভাই ভাই।

ছিল সাহিত্য সম্রাট, বিশ্ব কবি,
একজন বক্তৃতায় কাঁপিয়েছিল পৃথিবী।
বাঙালি কোনদিনই ছিলনা সচ্ছল;
বই কেনায় এবং পড়ায় ছিল অবিচল।

বাঙালির ভবিতব্য ছিল মাস্টার হওয়া;
ভবিষ্যৎ কে জ্ঞান-গরিমায় গড়ে তোলা।
ছিল ব্রহ্ম বিদ্যালয় আর মঠ-মিশন
পেতো আত্মপরিচয়, শিক্ষার ভূষণ।

এছাড়া বাঙালি ছিল আবেগপ্রবণ;
পেয়েছি নেতাজী সুভাষ, পেয়েছি মুজিবুর রহমান।
মা শৃঙ্খলিত তাঁদের কেঁপেছে গলা
ঋষি অরবিন্দ বোমা মামলা সবার জানা।

ছিল যুগান্তর অনুশীলন সমিতি
বাঙালি ছেলে মেয়েরা হতো অনুগামী।
আর অগ্নিমন্ত্রে পেতো শিক্ষা;
গ্রহন করতো সবাই সেই নেয়নিষ্ঠ দীক্ষা।

ওরা বিশ্বাসে ছিল অটল চাই মায়ের স্বাধীনতা
মুক্ত হতে চায় ভেঙে শৃংখল পরাধীনতার।
ছিল সংস্কৃতি চর্চা সাথে ক্লাব সিনেমা;
গান, ফুটবল, মুখে উচ্চারিত হত না "না"।

গ্রামে গঞ্জে ছিল কত সংগঠন
আর কত দলে দলে অনুশীলন।
দোষে গুনে বাঙালি ছিল অনুপম অদ্বিতীয়
মধুর ভাষা বাংলা ভাষায় সুখ স্বর্গীয়।

ছিল রাজা রামমোহন বিদ্যাসাগর দাদা ঠাকুরেরা
চেতনায় ছিল কমিউনিজম সাম্যবাদের ধারা।
ছিল উপেন্দ্রকিশোর, সুকুমার, আবোল তাবোল;
ছিল সত্যজিৎ, জগদীশ, সত্যেন, জগতে বিরল।

ছিল তেলেভাজা, রসগোল্লা, সন্দেশ,
সাধে অপূর্ব খেয়েও হতো না শেষ।
সবুজ শস্যের মাঠ কোমরে গামছা বাঁধা কৃষক
কত আশা নিরাশায় বুক করে ধক ধক।

এই সেই বাঙালি কেউ কভু বলেনি তো চোর;
এসে দুহাজার বিশ দশকে এলো এ কোন ঘোর।
এই কি সেই বাঙালির পরিচয়?
সেই চারিত্রিক অবনমনে পাই বড় ভয়।

বাঙালিরা আজ যা ভাবতো বিশ্ব ভাবতো পরে;
সেই বাঙালিকে আজ বাইরের ওরা চোর বলে।

২৯শে জৈষ্ঠ, ২৪৩১,
ইং ১২/০৬/২০২৪,
বুধবার বিকেল ৬:০২। ২৩৯৮, ২১/১২৫
১৩/০৬/২০২৪।