[তাহাদের কথা]
ঘরে ফেরার সুদীর্ঘ পথ বয়েস বারো মোটে,
পেটের জ্বালা বড় কঠিন কিছুই যে না জোটে।
লকডাউনের মেয়াদ যখন বাড়ল অবশেষে
অনন্যোপায় শ্রমিক যত চলল দিনের শেষে।
তেলেঙ্গানায় যাত্রা শুরু শেষ হবে বিজাপুরে
তিনটি দিনে পথ পেরোবে হোকনা যত দূরে।
গল্প ছলেই পেরিয়ে যাবে দুশো মাইল পথ
সঙ্গে আছে আরও এগারো পুরাবে মনোরথ।
হাঁটার শুরু ঘরের টানেই ছোট্ট দু'খান পা'য়
পথের ক্লান্তি ক্ষুধার ছোবল চলাই বড় দায়।
সড়ক পথে অনেক জ্বালা পথে পুলিশ কাঁটা
নজরদারির ভয়েই তাদের দুর্গম পথে হাঁটা।
এমনি করে এক-এক করে দুদিন কেটে যায়
পুলিশ নজর এড়িয়ে ধীরে বাড়ির পথে ধায়।
শরীর জুড়েই ক্লান্তি নামে অবশ দেহ মন
দীর্ঘ শ্রমের ধকল সয়েই আগায় ছোট জন।
খিদে তেষ্টায় অবশ শরীর সাথ দেয়না আর
গ্রামের থেকে একটু দূরেই থমকায় পা তার।
চিরটা কাল শরীরটা তার অপুষ্টিতেই ভরা
দীর্ঘ শ্রমের ধকলেতেই হয়ে যায় আধমরা।
শরীর ক্রমে ঝিমিয়ে আসে আঁধার নামে শেষে
পেটের ব্যথায় লুটিয়ে পড়ে বাড়ির কাছে এসে।
অনাহার আর তৃষ্ণা নিয়েই শেষ হয় তার চলা
ছোট্ট শরীর ফিরল তবুও নিথর এখন বালা।
দেশের মধ্যে চলছে যখন লকডাউনের পালা
নানান ছবি-ই আসছে উঠে দুর্দশারই জ্বালা।
পরিযায়ী শ্রমিকরা আজ বড়ই অসহায়
কেউ ভাবেনা তাদের কথা ভাবা যাদের দায়।
সবাই জানে সমাজ গড়ার ওরাই কারিগর
পায়না মূল্য আসল সময়ে অসহায় অতঃপর।
দেশের কর্তা শুধাই তোমায় শুধুই একটি বার
জবাব দেবে কি ভাসছে কেন গরিবের সংসার।
অবহেলাতেই মরছে কেন গরীব-গুর্বো দল
সমাজের বড় অংশ তবুও এ-এক খুড়োর কল।
[দুবাই, ২২শে এপ্রিল, ২০২০]
©চিন্ময়