বাবা কয় ডানে যারে
খোকা যায় বামে;
শুনলে বা কথা বুঝি
কমে খোকা দামে।
কার কথা কেবা শোনে
হামেশাই জিদ;
ঘোরাবে সে একা ছড়ি
একা তারি জিত
তার কথা সবি ঠিক
নিপাতনে সিদ্ধ;
বাকী সবে বোকা গাধা
সে একাই ঋদ্ধ।
লাগেনা লাগেনা বাবা
খোকা মহাবীর;
যা করে সে মনখুশী
সটান সিনা,শির।
আহ্লাদে অভিমানে
কাটালো সে চিরকাল;
বটগাছ হয়ে বাবা
আজিবনি ছিল ঢাল।
বাবা মানে পৃথিবী
বাবাই যে বর্ম;
বুঝলোনা হতভাগা
সে বাবার মর্ম।
একদিন বাবা তারে
ডাঁটে মৃদু ধমকে;
বীরখোকা ঘর ছাড়ে
স্বমহিম ঠমকে।
যাবার আগে যায় বলে
করে পণ,দৃঢ় স্বরে;
ফিরবোনা কোনদিন
বাবা যদি যায়ও মরে।
কি মহান বীর খোকা
কথায় সে নড়েনা;
শতডাক আকুতিতে
খোকা বাড়ী ফেরেনা।
ভাগ্যের পরিহাস
কি নিঠুর নিয়তি;
বাবা নেই সন্দেশে
খোকা বাড়ী ফিরতি।
নিথর বাবারে দেখে
মুখে নেই রা'টি;
পৃথিবী পাল্টে গেছে
পায়ে নেই মাটি।
বাবা যেনো বলে উঠে
হায় কি করলি খোকা;
এতদিন পরে বুঝি
ফিরলিরে তুই বোকা?
খোকা আর পারছেনা
কোথা রাখে এই দুখ;
কান্না আটকে আসে
খানখান কচি বুক।
পাথুরে পাহাড় যেন
বুকে হলো জড়ো;
এক নিমিষেই খোকা
হয়ে গেলো বড়।
উপহাস নাকি খেল
বিধি কারে বলে?
ঠিক ক'টা দিন পরে
মা-ও গেলো চলে।
( বীর খোকার কি দশা
করেছ কি কল্প?
ফের কভু বলবো
মা হারানোর গল্প। )
খোকা আর নেই খোকা
হলো পরিণত;
আজকাল সবি সয়
আঘাত আসে যত।
ছেড়ে যায় স্বজনেরা
প্রিয়জনে দেয় ধোঁকা;
ছোবলে খুবলে মারে
লাথি মারে চামচিকা।
চেনা হয়ে গেছে আজ
ভাই-বোন,খালা মামী;
চির চেনা মুখ সবি
হাড়ে হাড়ে হারামী।
খোকা বুঝে জীবনের
কি কদর্য রূপ;
সবি আজ সয়ে যায়
বীর খোকা চুপ।
আজ খোকা ভারি একা
সুনসান পৃথিবী;
কেউ কারো নয় হেথা
শুধু চায়,কি দিবি?
হায়রে বীরপুরুষ
কোথায় সে মর্দানি?
সেই বীর আজ গাধা
জীবনের বোঝা টানি।
আরো কর,আরো কর
আরো দেখা জিদ;
লাগেনা লাগেনা বাবা
আজো তোর-ই জিত।
ফাঁকা,সব ফাঁকা লাগে
কি ভীষন একা;
হঠাৎই চমকে উঠে
কে যেন ডাকে খোকা !!
ওরে খোকা,উঠ খোকা
কি হয়েছে বল;
ভাবিসনে,সাথে আছি
হারাসনে মনোবল।
কে ডাকে?কে ডেকে যায়?
খোকা উঠে হতচকি;
ডাকছে কে?বাবা না?
এথা ওথা দেয় উঁকি।
বাবা,ও বাবা মোর
কোথা গেলে চলে?
পারছিনা আমি আর
বুক যায় জ্বলে।
এইভাবে বাবা বলে
বুক ফাটা সাধে;
বাবার সে প্রিয় খোকা
প্রায় প্রায় কাঁদে।
বীরপুরুষ উপাখ্যান
এখানেই শেষ;
আধো মরা,আধা প্রাণে
আছে খোকা বেশ।
শেষকথাঃ
বাবাহীন ধরায় আজ
ছয় সাল পুরালো;
আমিও গুনছি দিন
প্রায় বুঝি ফুরালো...............
(২৮শে জুলাই)