"প্রকৃত নারীর মতো"
©চারণকবি বৈদ্যনাথ
...............................................
রপোর কাঠির স্পর্শে কখন ঘুমিয়ে গেছে সেই সব রূপসী কন্যারা
স্বর্গের বাসিন্দা যারা আহা সেই দেবকূল তারাও বিষণ্ণ বড়ো
উর্বশী অপ্সরা নেই
ভাঁটফুলের মতো কিছু পড়ে আছে ছিন্ন ঘুঙুর।
প্রেমের প্রতিমা নেই, যার চুড়ি কঙ্কণের ঘায়ে
ফিনকি দিয়ে রক্ত পড়বে দুর্ভাগা-কপাল ফেটে
আহা বড়ো সোহাগ যন্ত্রণা
বুকের কাঁচুলি ছিড়ে সুগন্ধি কস্তুরী তেলে
সে মেয়েই বেঁধে দেবে আলতো হাতে কপালে ব্যান্ডেজ
তালপাতার পাখা হাতে সারারাত ব্যজনী দোলাবে
এবং বারংবার ক্ষমা চাইবে হৃদয় জড়িয়ে।
ত্রিভুবন ঘুরে ঘুরে অনেক খুঁজেছি আমি।
এম্নি কোনো নারীকে দেখিনা
যার বুকে মুখ রেখে অকপটে গল্প করে যাবো
আবীরে রাঙানো মুখ
সারা অঙ্গে সুগন্ধি কস্তুরী প্রেম, চন্দন আর চুয়া
যার কণ্ঠে কথা বলবে ইনিয়ে বিনিয়ে সেই পাহাড়ি মনুয়া
সেই সব মেয়ে নেই আহা যে নিপুন হাতে তৈরি করা জর্দাপানে
শরীরে আমেজ এনে দেবে
যার চোখ পুরুষের চোখ কেড়ে নেবে
যার বুক আমার মায়ের মতো মমতায় ভরা
যার প্রেম পদাবলি গানের মতন
পুরুষের, প্রেমিকের, সন্তানের জন্যে আছে
যার বুকে অফুরন্ত ধন।
সে নারী আসেনি কাছে যার স্পর্শে জেগে উঠবে পাষাণ-পুরুষ
পিঠভর্তি এলােচুল ছড়িয়ে আলপনা আঁকবে
পুরুষের খরাভূমি হৃদয় উঠোনে
চোখের চাউনি আর মুখের আদল দেখে
যে মেয়েরা ধরে ফেলবে সবটুকু জীবনের মানে।
আমি তাই বড়াে দুঃখী বড়োই একাকী আজ বিষণ্ণ নায়ক
আমার মায়ের চোখ
বারংবার মনে পড়ছে সন্তান, বাৎসল্যে ভরা জননীর বুক
আহা মধুময়
আমার জীবন জুড়ে যতটুকু জয়
সবটুকু তারই অবদান
আমার মুখের ভাষা, বুকভরা মনুষ্যত্ব যেটুকু মহান।
দ্বিতীয় রমণী কোনো নেই
তন্ন তন্ন করে খুঁজি—তবুও পাইনি কোনো
মনের মানসী কিংবা কোনো নারীকেই।
হারিয়ে তলিয়ে যাওয়া কোনো এক পুরুষেরে
যে মেয়ে বাঁচিয়ে তুলবে পরম আদরে।
সমগ্র সংসার জুড়ে ঘুরে ফেরে অনেক মেয়েরা।
তবু যেন মনে হয়, একটিও রমণী নেই আমাদের ঘরে।
নারীত্বে মাতৃত্বে গড়া প্রেমময়ী কল্পময়ী
হাস্যময়ী লাস্যময়ী রমণীর মুখ
বহুকাল দেখি নাই – দেখিতে উৎসুক।।