দুই বাংলার কবিদের উজ্জ্বল উপস্থিতিতে পালিত হল বিশ্ব কবিতা দিবস। শনিবার ২১ মার্চ শুরু হয়ে সেটি শেষ হলো রবিবার দুপুরে। এই বছর একুশে ফেব্রুয়ারিতে একুশে পদক পাওয়া বর্ষীয়ান কবি মহম্মদ নুরুল হুদা-সহ বাংলাদেশের ১০ জন আর এই বাংলার জনা নবীন-প্রবীন মিলিয়ে ৭০ জন কবি-ছড়াকারের সমন্বয়ে জমে উঠেছিল ছড়া উৎসব। সেই আসর আবার বসেছিল পলাশ কুসুমের পাপড়িবিছানো শান্তিনিকেতনের রাঙ্গামাটির পথের ধারে ভুবনডাঙ্গার একটি লজের প্রাঙ্গনে। আয়োজক ছিল ডায়মন্ড হারবারের সাহিত্য পত্রিকা ‘কুসুমের ফেরা’। কবি মুহম্মদ নুরুল হুদা ছাড়াও বাংলাদেশ থেকে রবীন্দ্রনাথের কর্মভূমিতে এই ছিলেন এম আর মঞ্জু, রফিকুল ইসলাম, আশরাফ জুয়েল, তামান্না জেসমিন, আসলাম সানি প্রমুখ।
আর এই বাংলার কবি-ছড়াকারদের মধ্যে অরুণ চট্টোপাধ্যায়, আশিস গিরি, কার্তিক ঘোষ, রথীন কর, কাজল চক্রবর্তী, মৃদুল দাসগুপ্ত, দীপ মুখোপাধ্যায়, মৃণাল বসু চৌধুরী, চন্দ্রশেখর ভট্টাচার্য, রোশনী গুহরায়, শ্যামলী গুহরায়, অচিন্ত্য সুরাল, রীণা গিরি, কণিকা চট্টরাজ, অঞ্জনা চক্রবর্তী প্রমুখ ছিলেন। কুসুমের ফেরা-র সম্পাদক শাকিল আহমেদের সুন্দর ব্যবস্থাপনায় বিশ্ব কবিতা দিবস প্রাণবন্ত হয়ে উঠেছিল।
সেখানে এই বছরের সাহিত্য পুরস্কারও অর্পণ করল কুসুমের ফেরা। এ-বছরের লালন পুরস্কার পেলেন মুহম্মদ নুরুল হুদা। জীবনানন্দ পুরস্কার ২০১৫-এ সম্মানিত হলেন কবি রফিকুল ইসলাম। কবি শামসুর রহমানের নামাঙ্কিত পুরস্কার পেলেন কবি মৃদুল দাসগুপ্ত। কুসুমের ফেরা সমাজসেবা পুরস্কার পেলেন ডাঃ রজব আলি শেখ। এ-বছরের সুকুমার রায় পুরস্কারে ভূষিত ছড়াকার ভবানীপ্রসাদ মজুমদার বয়সে কারণে এসে পৌঁছতে পারেন নি।
ছড়া উৎসবের শুরুতেই বিশ্বভারতীর সঙ্গীত ভবনের ছাত্রীদের গানের পর কমল দে শিকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান অল্পকথায় জমিয়ে দিলেন হাটা-মাঠে-বাটের প্রাজ্ঞ পরিব্রাজক কবি অরুণ চক্রবর্তী। তার ‘লাল পাহাড়ির দ্যাশে যা/ রাঙা মাটির দেশে যা’ এখন বিশ্বের বহু দেশে গাওয়া হয়। মঞ্চে তখন নুরুল হুদা, আশিস গিরি, কার্তিক ঘোষ, রথীন করের মত বিশিষ্ট কবিরা। তারপর আর কে আটকায় ছড়ার ছররা থামলো গিয়ে পরের দিন মধ্যাহ্ন ভোজের আগে। তারই মধ্যে জীবন যাপনে, রাজনীতি ও প্রতিবাদে বাঙালি জীবনে ছড়ার গুরুত্ব নিয়েও মনোজ্ঞ আলোচনা হল। দুই বাংলা কবি ও ছড়াকারেরা ভাসিয়ে দিলেন ভুবনডাঙ্গা।