(পুজোর লেখা নিয়ে এখনও ব্যস্ত। একটু সময় করে নিয়েই আসবো বন্ধুরা। রাগ কোরো না)
---------------------------------------
ক্ষিরসাগরে বাইছে দেখ মানুষের এক তরী
ছিন্নপাতার ভেলা গেছে রূপকথাতে ভরি

পাতায় বসে পা ঝুলিয়ে বাইছে দাঁড় ব্যাঙা
পালের উপর ফিঙ্গে-দোয়েল, রান্না করেন চ্যাঙা

দেখছি চেয়ে ওই সুদূরে পিঁপড়ে টানে মই
দস্যুরাজার জয়ধ্বনী, উড়ছে উড়ো খই

দেশের সবাই ঘুমিয়ে থাক, রাজার এই আদেশ
কেউ বলে না, সবাই বোঝে, লুঠ হয় স্বদেশ
  
ব্যাঙ্গমা-ব্যাঙ্গমী গায় ঘুমপাড়ানি গান
নদীর ধারে বৌ-ঝিয়েদের শুনছি কলতান

মাঠ পেরোল ঘাট পেরোল ডাইনে ঘন বন
মগডালেতে ঝুলছে বাদুড়, হাওয়া দেয় শন-শন

ভুতপতরির দেশ পেড়িয়ে দস্যুরাজার বাড়ি
পক্ষীরাজ ঘোড়ার টানা কেয়াপাতার গাড়ি

সোনার কৌটোয় রাজকন্যার প্রাণভোমরা থাকে
দুধের নদী মোড় নিয়েছে তেপান্তরের বাঁকে

ছিন্নপাতার তরীর নিচে ঠেকল যেন কী!
পায়ের নিচে খাড়া পাহাড় গড়িয়ে পড়ছে ঘি

ঘি খাবে তো রাজকুমার আর সওদাগরের ছা
কাঠকুড়ানির ছেলের জন্যে ভাতও জুটবে না

চাষার ছেলে জেলের ছেলে টানবে লাঙ্গল, হাল
রাজা-মন্ত্রীর ষড়যন্ত্র, দেশজুড়ে তাঁর জাল

পাইক, পেয়াদা, গুপ্তচরের এখন পোয়াবারো
পাহাড়, বনে ফিসফিসানি – সবক’টাকে ধরো

ভীষণ সন্ত্রাসী ওরা, রাজা দিয়েছেন বলে
কানটি পাতো গাছের গোড়ায় এবং নদীর জলে

ছেঁড়াপাতার নৌকা? সে কী! ধর, ব্যাটাকে ধর
গহীন বনের অচিন কোনে মেঘ জমাচ্ছে ঝড়

জাগে দূরে রূপকথার সাগর-নদী-পাহাড়
ঘুমান দস্যুরাজা সেরে চর্ব্য-চোষ্যে আহার

জাদুকাঠির ছোঁয়ায় তখন দেশ গিয়েছে জেগে
সবহারানো মানুষ যত ছুটল ঝড়ের বেগে

দস্যু রাজার রাজপুরিটা দখল নিল তারাই
মুক্ত হল রাজকন্যা, মুক্ত ধানের মড়াই

দস্যুরাজা বন্দী হল, উৎসব হবে দেশে
সোনার কাঠি, রূপার কাঠি, দেখে যা না এসে

আর কেউতো ঘুমাবে না, হাল ধরবে দেশের
ধন্যি ধন্যি রব উঠেছে, জয় জয় মানুষের।