ধানকাটা খড়গুছির মাঠে আজ ফের দেখা
মাঝখানে চলে গেছে বছর পঁচিশ
কৈশোরের দুরন্ত দিনগুলির স্মৃতির আয়না
এইটি ছিল দুজনের ডানপিটে খেলাঘর,
চুরি করা বাতাবির স্বাদ, প্রথম সিগারেট,
অন্ধকারে দুজনের প্রেমিকাকেই প্রথম চুম্বন...
তারপর অনেক জল বয়ে গেছে নদী দিয়ে
পঁচিশ বছর পর সেই মাঠে দেখা দুই সংসারীর
আপাত সৎ ও নির্বিরোধী দুই আশৈশব সখা।
ততদিনে 'দেশ' শব্দ মুছে জন্ম নিয়েছে দ্বেষ
রক্তদান নয়, এসেছে খুন কা বদলার নির্ঘোষ
যাবতীয় মিথ্যার বাস্পে দৃষ্টিরুদ্ধ জাগতিক
স্বচ্ছতার আদিগন্ত বিজ্ঞাপন
অরুণের নামার্থ জেনে ছেলের নাম শামস
রেখেছিল চাষী মহিউদ্দিন। বাঙলার গ্রাম
এমনটা হয়েই থাকে, জানেন আলিয়া বিবি
আর ভাবতেন, 'অরুণ তো আমারই আরেকটা'।
আজ এতদিন পর, শামস জানতে পারে
অরুণ কেবলই হিন্দু, 'গর্ব সে কহো...'
সে এখন মনে করে, শামসরা ঘুসপেটিয়া
ডি-ভোটার করে তাড়িয়ে দেওয়া হোক।
মহি চাচার অনেকটা বাপকেলে জমি ছিল,
শামস তো আর চাষ করে না, ড্রাইভারি করে
এনআরসি-তে বাদ গেলে ও যাবে শিবিরে
ডিটেনশন ক্যাম্পে গেলে জমিটা পাওয়া যাবে।
অরুণের স্বপ্নে ভাসে বহুতল কন্ডোমিয়াম।