স্বপ্ন সন্ধানীর স্বপ্ন
সুনিপা চ্যাটার্জি


পরিশ্রমের ফসল চুরি সবথেকে বিপজ্জনক নয়,
পুলিশের লাঠির আঘাত দেহকে ব্যতীত করলেও,
মনে দাগ ফেলতে পারেনা,
বিশ্বাসঘাতকের লোলুপ দৃষ্টি
সবথেকে বিপজ্জনক নয় ।

চুরি না করেও চোর অপবাদ
শুনতে খারাপ লাগে ঠিকই,
সহনশীলতার পরীক্ষায় নিজেকে
চুপ করে রাখা সেটাও খারাপ,
কিন্তু সবথেকে বিপজ্জনক নয় ।

ভন্ড নেতার  মধ্যে একজন
প্রকৃত দেশ প্রেমিকের উপস্থিতি অস্বস্তিকর,
মূর্খদের মাঝে  জ্ঞানীর উপস্থিতি  অবাঞ্ছিত,
জীবনটাকে  বিনা কাজে বাহিত
করে দেওয়ার নাম অপমৃত্যু,
পথদুর্ঘটনায় জীবনের থেকে সময়ের
দাম যখন বেশি হয় তখন সত্যিই খারাপ লাগে,
কিন্তু সেটা সবথেকে দুঃখ জনক নয় ।

সবথেকে দুঃখজনক হলো
মরার আগে অনেকবার মরে যাওয়া,
দেহের তীব্র দহন জ্বালা সহ্য করেও চুপ করে থাকা,
  অন্যায়ের বিরুদ্ধে হুংকার তোলার
ক্ষমতা থাকলেও মন কে চুপ করে রাখা,
  বাড়ি থেকে বেরিয়ে কর্মস্থানে যাওয়া
বা কর্মস্থান থেকে বাড়িতে সুস্থভাবে বাড়ি ফেরা,
এটাই সবথেকে বিপদজ্জনক।
জীবনের স্বপ্ন কে মেরে ফেলা
সবথেকে বিপজ্জনক।

হাতের ঘড়ি টা সময় তো ঠিকই জানাচ্ছে ,
কিন্তু তোমার দৃষ্টিতে  সেটা  যদি থেমে গিয়ে থাকে
তখন তা  বিপদজনক ।

সবথেকে বিপজ্জনক হল ঐ চোখ
সবকিছু দেখে তবুও  সে ঘুমিয়ে থাকে,
যে ভালোবাসার দৃষ্টি সমস্ত পৃথিবীটা
কে জয় করতে পারে সেটা
জেনেও যখন সে চোখ বুজে থাকে ।
সেটাই হলো সবথেকে বিপজ্জনক ।

সবথেকে বিপজ্জনক হল ঐ চাঁদ
হাজারো নরকীয় হত্যাকাণ্ড দেখেও
যে নির্লজ্জের মতো আকাশে ওঠে,
মনুষ্যত্বের উঁচু মাথাকে  ধুলোয় মিশে যেতে দেখে ও
যে রোজ পূর্বদিকে উদিত  হয়,
সেটাই  সবথেকে বিপজ্জনক ।

সবথেকে বিপজ্জনক হল ঐ গান,
আতঙ্কিত লোকের দরজায়
যখন আতঙ্কবাদী হামলা হয়
সেটা জেনেও যে গান  
তোমার কন্ঠে উচ্চারিত হয়।
সেটাই  সবথেকে বিপজ্জনক।

সবথেকে বিপজ্জনক হল ঐ রাত,
যখন হিংস্র হায়েনার দল অন্ধকারে
চুপিসারে ভোগ করে মনুষ্যত্বের নিথর দেহ,
তাদের লোলুপ দৃষ্টি সবসময় খুঁজতে  থাকে শিকার,
সেটা জেনেও রাত আসে দিনের শেষে,
সেটাই সবথেকে বিপজ্জনক ।

সবথেকে বিপজ্জনক হল ঐ দিক
যেদিকে আত্মার সূর্য ডুবে যায়
বিবেকের চেতনা লুপ্ত হয়,
মানবতা হয় চরম অপমানিত,
সেটাই হলো সবথেকে বিপজ্জনক।

পুলিশের লাঠি, বিশ্বাসঘাতকের জিঘাংসা
সবথেকে বিপজ্জনক নয়।
মনুষ্যত্বের মরে যাওয়া
সবথেকে বিপদজ্জনক ।
স্বপ্নসন্ধানী স্বপ্ন ভেঙে যাওয়া
সবথেকে বিপদজ্জনক ।

স মা প্ত