পর্বত
সুনিপা চ্যাটার্জি

ঐ দেখা যায় সুউচ্চ হিমালয়
মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে,
দুই হাত তুলে  আমন্ত্রণ করছে,
এসো আমার শিখরে এসো
আমাকে জয় করো  ।

প্রথম রবির কিরণ পড়লে তার বুকে
ইন্দ্রধনুশ তৈরি হয়,
আসলে কিন্তু সে কফিনের মতো সাদা
ও মৃতের মত শীতল ।


উচ্চতা ভালো কিন্তু এতো  উঁচু ভালো নয়
যেখানে যাওয়া অতি দুর্গম,
যেখানে কোন পাখি বাসা তৈরি করতে পারে না
যেখানে  পথিক কোন গাছের নীচে বিশ্রাম নিতে পারে না ।

উচ্চতা ভালো কিন্তু এত উঁচু ভালো নয়
যেখানে তৃষ্ণার্তের জল ও জমে হয় কঠিন বরফ,
জীবনধারণের জন্য প্রয়োজনীয় বায়ু নিতে হয় কৃত্রিম ভাবে,
যেখানে নদীর ধারা ও ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে
অতি ধীরে সমুদ্রের পানে ছুটে যায়  ।

উচ্চতা ভালো কিন্তু এতো  উঁচু ভালো নয়
যেখানে শুধুই মৃত্যুর হাতছানি,
পদে পদে বিপদ, না বন্ধুবান্ধব, না আত্মীয় পরিজন
শুধু একা নির্জীব নিশ্চল পাথরের মত
মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকা  ।

উচ্চতার সঙ্গে বিস্তার প্রয়োজন,
যেমন পর্বতের জন্য তেমনি মানুষের জন্যও ,
জ্ঞানী মানুষ যদি অহংকারী হয়
তার জ্ঞানের মূল্য থাকে না ।
মানী মানুষ যদি অপরকে অপমান করে
তবে তার মানের কদর হয় না ।
গুণী মানুষ যদি অপরকে ঘৃণা করে
তবে তার গুণের সমাদর হয় না ।

হে ভগবান, আমার মস্ত উন্নত করো,
কিন্তু এতো উঁচুতে তোল না
যাতে আমি আত্মীয়র সাথে কোলাকুলি না করতে পারি ,
যাতে সহকর্মীর সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলতে না পারি,
যাতে দুঃখী ও  আর্তের  ব্যথায় সমব্যথী না হতে পারি ।

মাথা এমন উঁচু কোর যাতে
সকলের সাথে চলতে পারি,
সকলের হয়ে বলতে পারি ।

স মা প্ত