ধৈর্য
সুনিপা চট্টোপাধ্যায়

সারাদিন ছিপ হাতে বসে
পুকুর পাড়ে,  সন্ধ্যে বেলায়  
শূন্যহাতে বাড়ি ফেরা ।

প্রতিদিন কাটে এই আশায়
আগামীকালের  নতুন সূর্য
নতুন আশার কিরণ আনবে জীবনে ।

পিতার কেশ পক্ক হয়
এই আশায় লেখাপড়া শিখে
পুত্র ধরবে সংসারের হাল ।

মাতা তার জীবনের সমস্ত
আশা-আকাঙ্ক্ষা নিংড়ে
পুত্রকে করে তোলে বিদ্যান, বুদ্ধিমান ।

  
পুত্রের বিয়ে দিয়ে বিধবা মাতা
যায় বৃদ্ধাশ্রমে,  খোলা জানালা,
দূরে  বিশাল নীল আকাশের
সামিয়ানাও মনে হয় ছোট  ।

এখন বিকেল পাঁচটা, হয়তো
খোকা এসেছে অফিস থেকে,
কে দেবে চা-জল, সান্তনা, তৈরি করে
দেবে পরের দিনের যুদ্ধের জন্য,
ইংরাজি শিক্ষায় শিক্ষিত স্ত্রী
নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত,  তার অত
সময় নেই,দশ বছরের
নাতি মানুষ হচ্ছে  বোর্ডিং –এ ।

সময় কম, কাজ অফুরন্ত, তাই
  নির্বাচন আসে পাঁচ বছরে একবার,
কলে জল নেই, রেশনে অন্ন নেই
শিক্ষিতের চাকুরী নেই,
বয়স্কদের সম্মান নেই,
নেই সামাজিক নিরাপত্তা ।
আছে শুধু আশা, ধৈর্য ও প্রতিশ্রুতি ।

একদিন আসবে যেদিন আমরা
পাব দেশের জন্য নেতা,
রোগের জন্য ডাক্তার,
শিক্ষার জন্য শিক্ষক মশাই,
সমাজে থাকবে না ধর্ম নিয়ে হানাহানি,
ধনী-গরিবের বিভেদ,
সংস্কৃতি নিয়ে সংগ্রাম  ।

নতুন সূর্য, নতুন ভাবে ,নতুন হয়ে
আসবে আমাদের কাছে
ধৈর্য ধরে বসে থাকি,
সেই দিনের আশায় ।।
                                                                      
                  স মা প্ত