বহুদিন ধরে জানিস খোকা তোরে;
খুব বেশী মনে পড়ছে!
দরজা তো খোলাই আছে, জানালাও তোলা
তবু আঁধার, কোথা হতে এতো ঝরছে?
লিখবো বলেই তো লিখতে বসেছি
ঝাপসা চোখে হাত কেন তবে কাপছে?
কেমন আছিস বাবা, তোর গাড়ী বাড়ী নিয়ে?
যত্নের হয়না তো কমতি; ঐ চাকর বাকর দিয়ে?
আমিও বেশ আছি খোকা, এখানে একা দাড়িয়ে
বিরক্ত করতে চাইনা তোরে, কথা বেশী বাড়িয়ে –
আজকের দিনে সোনা এসেছিলি, কোলে
চুমুতে চুমুতে ওরে, দিয়েছিলাম ভরে
তোর নিষ্পাপ কোমল গালে,
গাইতে হতো রোজ রাতে গান, তোর ঘুমের সময় হলে
তোর কত উৎপাত, ধরে রাখতি রে বাবা এই হাত
চিৎকার করতি কত; একটু আড়ালে গেলে,
তুই তো জানিস না খোকা, তোর কান্নার রোলে
নির্ঘুম প্রতি রাত, তোর পাশে হয়ে কাত
বুনেছিলাম স্বপ্ন কত, তোর – ই খেয়ালে ।
এখন তো তুই অনেক বড় নামীদামী কেউ,
আরো বেশী ভালো থাক্ বাবা, লাগুক সুখের ঢেউ ।
থাকলে বেঁচে আমার মত, তোর বাবাও যে আজ কত খুশী হতো!
মেটাতে খোকা তোর ঐ অবুঝ আবেদন
অনাহারে দিন কত কাটিয়েছি দুজন;
না হলে কি আর তোর বাবা, তোকে শহরে পড়াতে পারতো?
থাকলে বেঁচে আমার মত, তোর বাবাও কি তোর মতই করতো?
প্রথম হাত ধরে তোকে হাঁটতে শেখানো
দুজনের হাঁসি আছে তোর ঐ শরীরে মাখানো
জানিস না ওরে তাই ধরিস নি আমায়, তোর বাবা থাকলে কি আর ছাড়তো?
রাগ করিস নে বাবা, অনেক সময় তোর হয়ত নিয়ে ফেলছি
কি করবো বল্, একা একা তোদের ছাড়া স্মৃতির গল্প গুলো গিলছি
বাঁচব না খোকা, এর পরেও যদি বলিস – ‘মা এ সংসারে শুধু জ্বলছি’
মলিন দেওয়ালে ঢাকা বৃদ্ধাশ্রম থেকে – ‘ইতি তোর হতভাগী মা বলছি’ ।