একটি পাতা বাহার গাছ, একটি জীবন!
গাছের শাখা-প্রশাখায় হরেক রং’র পাতা
ঝুলে আছে নিজের জীবন নিয়ে!
মালি প্রতিদিন গাছের পরিচর্যা করে,
যেন তার সন্তানের মত লালন-পালন করে ক্ষামতি নাই কোন।
দুর থেকে খেয়াল করলে মনে হবে যেন,
মালি তার সন্তানের সাথে কথা বলছে, খেলাধুলা করছে!
কখনো কখনো আবার অভিমান করছে!
রহিম মালিকে কৌতূহল বশতঃ মুনিব জিজ্ঞাসা করে
আচ্ছা আমি মাঝে মাঝে দেখি ঐ পাতা বাহার গাছের সাথে
কথা বল, অভিমান কর, আবার কি যেন বিড় বিড় করে বলে!
রহিম মালি মুনিবের সামনে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকে,
তোমার কোন ভয় নাই তুমি নির্দ্বিধায় বলো
ছোট বেলা থেকে আমি আপনাদের বাড়িতে, বাবা চলে যাওয়ার পর
আমি এই বাগানের মালি!
এই যে দেখছেন,
পুরো বাগান টা অনেক রকম ফুল ও পাতা বাহারের গাছ আছে।
বাগানের প্রতিটি গাছ আমার সন্তান তুল্য!
কোন গাছের ফুল বা পাতা ঝরে পড়ে আমার খুব কষ্ট হয়,
কেন হয় বলতে পারবো না।
কেন পারবে না! ঠিক আছে স্যার বলছি, আপনারা
আপনাদের পরিবার নিয়ে থাকেন, খান এবং ঘুমান
আবার পরের দিন যার যার কাজে চলে যান।
আমি আমি বারান্দায় থাকি তাদের নিয়ে।
এটাই আমার পরিবার!
ঐ যে বড় পাতা-বাহার গাছটি দেখছেন!
আমার বড় সন্তান, তার একটি পাতা যখন ঝরে পড়ে
তখন মনে হয় বাবা হয়ে আমি সঠিক দায়িত্ব পালন করতে পারিনি!
নিজের কাছে বড় অপরাধী হয়ই।
রহিম মালির কথা শুনে একটি কথাও বলতে পারলোনা মুনিব!
তবে সে কি বলল তা বুঝতে পেরেছে!
আমাদের মত লোকেরা কখনো রহিমদের চাওয়া-পাওয়া,
দুঃখ কষ্ট বুঝি না বা বুঝতে চাই না।