বাড়ীর সামনে ছোট একটা বাগান ছিল,
হরেক রকমের ফুল গাছের সমারহ, মালি নেই
বাড়ী ওয়ালী বাগানের সকাল বিকাল পরিচর্যা করতঃ
প্রতিদিন কাক ডাকা ভোরে ঘুম থেকে উঠে গোলাপ,
বেলি, জবা, গাঁদা ফুল কুয়াশার ভিতর যেন অভিবাদন জানাচ্ছে!
বাড়ীর তিন দিক ফাঁকা পাশে পুকুর মাছ ও
হাঁসের জলকেলি চোখে পড়ে মন নিয়ে যায়
অজানার চাওয়ার পথে, স্বপ্নের মাঝে যেন
হারিয়ে যায় নিজে! পাখির কোলাহল, মোরগের
ডাক, টুংটাং রিকসার শব্দ, দু’এক জন প্রাতর্ভ্রমণ রাস্তায়
বারান্দায় দাঁড়িয়ে উপভোগ করি!
এ যে শরত কাল মৃদু-মন্দ সাতাশ স্বর্গীয় অনুভূতি
পাশের বাড়ীর টুনি বাতি গুলো পর্যায়ক্রমে নিভে গেল
দিনের আলো ফুটে আসছে, ব্যস্ত জীবন শুরু,
সারা আকাশ ময় মেঘের ছেড়া ছেড়া আবির
নদীর চরের মত কোথাও কাশ ফুলে ভরা আবার
কোথাও বালুর স্তূপ, যেন জীবনের প্রতিটি বাঁক!
হঠাৎ একদিন বাড়ী ফিরে শুনি বাড়ী-ওয়ালী আর নেই
পাড়ি দিয়েছেন না ফেরার দেশে! শুনে মনটা ভিষন খারাপ.
বহুদিন এই বাড়ীতে আমরা ভাড়া থাকি!
বাড়ী-ওয়ালী ফ্লাটের সকল ভাড়াটিয়ার সুখে-দুঃখে জড়িয়ে ছিল।
এখন আর বাগান নাই, নতুন বিল্ডিং, চারিদিকে ইটের দেয়াল
মন্ত্রমুগ্ধ পরিবেশ এখন ইট, রড, সিমেন্ট, বালু দিয়ে ঢাকা,
স্বাভাবিক পরিবেশ হারিয়ে উঞ্চতা ছড়াচ্ছে, আবহাওয়া পরিবর্তন
যেন মানুষের চলার পথ উল্টো পথে নিয়ে যাচ্ছে!
আধুনিকতা আমাদের ঠেলে দিচ্ছে বিবর্তনের পথে
এই পৃথিবী একদিন ধ্বংস হয়ে যাবে, মানুষ কি অন্য প্রজাতি হবে,
প্রেম ভালবাসা, আবেগ, সহমর্মিতা আমাদের ছেড়ে চলে যাবে!
তবুও কালের সাক্ষী, যুগের সাক্ষী হয়ে রয়ে যাবে কিছু চিহ্ন।