মৌমিতা
******

একজন মৌমিতা- শিক্ষানবিস চিকিৎসক  
কর্মরত নিজ মাতৃভূমির নিজের কর্মস্থলে
একটি আর.জি.কর হাসপাতাল, কলকাতা
বিরামহীন ছত্রিশ ঘন্টা ব্যস্ত কাজে ক্লান্ত দেহ
বিবস্ত্র হয়ে যায় পাশবিক নর পৈশাচিকতায়
হায়নার থাবায় সমস্ত শরীর ক্ষতবিক্ষত
ঠোঁট, মুখ, গোপনাঙ্গে শুধু রক্ত আর রক্ত
জুলুম, অত্যাচার, নির্যাতনে গণধর্ষণ  
ঘাতকদের সাহায্যকারী দুই নারী সহকর্মী
চমকে উঠে সভ্যতা বিলীন হওয়া মানবতায়।

শুধু একজন অনাড়ম্বর মৌমিতা দেবনাথ
প্রতিদ্বন্দ্বী ১৮ কিংবা ২০ হিংস্র দানব পুরুষ
বীভৎস, কুরুচিপূর্ণ, কুৎসিত মানুষরূপী পশু
আঁচড়ে কামড়ে ছিন্নভিন্ন করেছে কোমল দেহ
অশ্লীলতায় খন্ডিত হয়েছে স্পর্শকাতর হাইম্যান
১১৩টা কামর, স্খলিত ১৫০গ্রাম নোংরা তরল
পৈশাচিকতায় থেতলে গেছে বুকের নরম মাংসপিণ্ড
রুদ্ধ কন্ঠ, ভাঙ্গা ঘাড়, শ্বাস রুদ্ধ একজন মৌমিতা
বস্ত্রহীন, প্রাণহীন নিথর দেহে আপন কর্মস্থলে।
এটা কি কোন বর্বরতা? নাকি উচ্চ মাত্রার অন্য কিছু?

বিচার চাই, বিচার চাই স্লোগানে অবরুদ্ধ পথঘাট
কি হবে বিচারে? কেমন বিচার? কোন আইনে?
ভেবেছ কি একবার দু’চোখ বুজে স্বকীয়তায়
আজকের মৌমিতা হতো যদি তোমার মেয়ে!
কি দন্ড দিতে বিচারে তুমি এই পাশবিকতার?
অবশ্যম্ভাবী উত্তেজনায় বিস্ফোরনে বলতে  
বুঝতে চাইনা আমি দেশনীতি আর কূটনীতি
চাইনা আমি বৈষম্যের আইন, মানিনা রাজনীতি
ফাঁসি নয়; বিচার চাই, মুক্তি চাই বিভীষিকাময়ের
এতো যন্ত্রনার হত্যা কি এক ফাঁসিতে দন্ড হয়?

বিচার চাই ঘাতক পিচাশের, দৃষ্টান্ত রাখার বিচার।
জনতার বিচার জনতার আদালতে উন্মুক্ত কর
লজ্জা ছেড়ে বিবস্ত্র করো যেমন ছিল মৌমিতা
আঁচড়ে চামড়া ছেঁড়- যেমন আঁচড়ে মৌমিতা
লেলিয়ে দাও বিষাক্ত পোকা- যেমন কামড়ে মৌমিতা
হাতুড়িতে থেতলে দাও সমস্ত শরীর, গোপন অঙ্গ
অর্ধ কন্ঠ চেপে ধর। মৃত্যু নয় যেন; শুধু যন্ত্রনা
বছরের পর বছর বেচে থাকুক মৃত্যু কামনায়
দেখুক পাপিষ্ট পৈচাশিকতার শাস্তি, হোক দৃষ্টান্ত
যেন অন্য মৌমিতারা আস্থায় থাকে নির্বিঘ্নে।

লুন্ঠিত হবে মানবাধিকার, চোখ রাঙাবে বিশ্ব
ভয় করোনা, রুখে দাঁড়াও, গর্জে ওঠো
পেষিত মৌমিতার দেহ বিশ্ব অবলোকনে সিদ্ধ
মৌমিতা এখন এক পরিবারের বা দেশের নয়
আজ সারা বিশ্বের মানবতার বিবেক মৌমিতা
মৃত্যুদন্ডে নয়; যদি দৃষ্টান্তে বিচার কর নরপিচাশের
হতে পারে শোষিতের নতুন এক মানবাধিকার।