দিনটা খুব মেঘলা
আকাশটার মন ভাল নেই।
শুধু যে আজ তা নয়,
পাঁচ দিন যাবৎ বৃষ্টি অবিরত।
কখনো মুষলধারে, কখনো ধমকা হাওয়ায়
পানিতে রাস্তা টইটম্বুর, প্লাবনের ঢেউ।
মনে পড়ে পুরনো সেই কথা
কোন এক বৃষ্টিতে রিক্সায় আমরা দুজন।
পালতোলা নৌকার মতো ছাউনিটা উঠানো
উরুতে উরু, মাথাতে মাথা ঠুকে যায়।
লজ্জায় তোমার চেহারা বিবর্ণ
আহা! সে কি লজ্জা।
বাতাসে ভেসে আসা জলরাশি
শ্যামলা মুখে যেন মুক্তর দানা।
বিজলী আর বাজ পড়ার শব্দে ভীত তুমি
জড়োসড়ো হয়ে কুঁচকে যাওয়া শক্ত দেহ
লুটিয়ে পড়া আমার কুলের ওপর।
আধো ভেজা ছড়িয়ে পড়া কেশের ঘ্রাণ
আমি ছোয়ায় মুহূর্তে অবাক তুমি
আহ! সে কি লজ্জা।
রাস্তার স্পিড ব্রেকার পানিতে ডুবন্ত
রশিক রিক্সা চালক বড্ড বেসামাল।
শক্ত ঝাঁকনিতে উড়ন্ত তুমি
জাপটে ধরেছ ছিটকে পড়া ঠেকাতে
মুখের সাথে মুখ, বুকের সাথে বুক।
হঠাৎ আকাশে প্রকাণ্ড বিজলির চমক
যেন আমার মন তরঙ্গে তাল মিলিয়েছে।
আমার চোখে তাকিয়ে হঠাৎ চমকে ওঠা তুমি
আহ! সে কি লজ্জা।
স্মৃতির পাতায় জমা আছে দিনগুলো
অভিমান, বায়না, লুকোচুরি-
কামড়ে ধরা ললিপপে ঠোটের স্পর্শ পাওয়া
অগণিত মিথ্যা বলে ঘুরতে যাওয়া
সিনেমা কিংবা থিয়েটারের সিটে
পাশাপাশি বসে মুখের চুইংগাম বদল।
একটু স্পর্শেই শিহরিত হওয়া তুমি
আহ! সে কি লজ্জা।
সেই তুমি আজ আমার ঘরে
আমার পাশে দিনরাত খোলামেলা
করছো খেলা অবিরাম মনমুগ্ধতায়।
হারিয়েছো লজ্জা, রাখোনি কোন আবরণ
তুমি আমি একই সত্তা, সমগন্ধে উন্মাদ।
সুযোগ পেলেই বল-
দুত্তরি ছাই! কিসের আবার লজ্জা?
সেই তুমি আমার সন্তানের জননী।