জ্বালা
*****

মনে পড়ে কি তোমার?
আমাকে- তোমার আমিকে!
যে আমি তোমার নিশ্চিত নিঃশ্বাস
বাস্তবতার অথৈ কঠোরতায়
নিকৃষ্টভাবে আড়াল করেছ নরকে
তোমাকে- আমার তুমিকে।

বিশ্বাসঘাতকতা দায়মুক্ত-
তুমি ছাড়া একটি দিনও সইতনা আমার
আজ মাস পেরিয়ে বছর অতিক্রান্ত, চলমান
কতগুলো দিন দেখিনা আমার তুমিকে
তোমার চোখ, চুলের গন্ধ, হাস্য উপহাস।
দেখিনা সেই চট করে রেগে যাওয়া মুখটা
আমাকে খুব কাঁদায়, সেই মুখের মায়ায়।

বারণ সত্ত্বেও শাক মাছ মিশ্রিত বাজার-সদাই
ব্যাগ দেখেই তোমার ব্যংচি লাগা মুখের রূপ
স্তব্দ হয়ে দাঁড়িয়ে বড় বড় চোখে তাকিয়ে
আমাকে গিলে খাওয়া, আহ! কি অপরূপ!
ছোট মাছ কোটা খুব যন্ত্রনা তোমার
বসে যেতাম বটি হাতে তোমার গতর ঘেষে
অনুভবে পেতাম- তুমি খুশি, গোপন উৎফুল্ল
তবুও তোমার মুখটা থাকতো বিষ বিরক্ত।
ছটর-ফটর রাগে কত কথা তোমার বলতে থাকা
পাখনা কাট! ফুল্কা ফেল, লেজ কে কাটবে?
দোষের কথা, তবুও আহ! কি যে আনন্দ!

ইচ্ছে করেই বাথরুমের দরজাটা
দু'একবার খোলা রাখতাম তোমায় দেখে
যেন তোমার বকুনীটা পেয়ে যাই।
পুস্তকে পড়েছ- বাথরুম নাকি শয়তানের ঘর
সবচেয়ে বড় ইবলিসটার বসবাস নাকি ওখানেই
চিৎকার- “আর কত বলবো? মনে থাকেনা কেন?
মনটা বাইরে কাকে বর্গা দিয়ে এসেছো?”
কন্ঠটা খরখরে তবুও; আহ! কি মায়া! অধিকারের।
শুনে বিরক্তিকর ভাব দেখাতাম আমিও
তবে ভেতরের মজাটা কি আর কেও দেখে?

তোমার বিমূর্ত ভাব আজ বড্ড জ্বালায়
এতোটা শূন্যতা নিয়ে কি বেঁচে থাকা যায়?
এতটা দহণ বোধ করি আগুনেও নেই।
কেন তুমি এমন? আজ কেন মৃতের নিরবতা?
কতটা যত্ন করে প্রেম শিখালে আমায়
বিস্মৃতি থাকার মন্ত্রটা শিখাওনি ভুলে।
জোর করে টেনে ধরে রাখার বিদ্যা দিলে
দূরে সরানোর কৌশলটা শিখিয়ে দাওনি
অনেক যত্ন করে মারলে আমায়, স্বার্থপরতায়।

বাথরুমের খোলা দরজাটা আজ বড্ড ভাবায় আমায়
ইবলিস শয়তানটা বের হয়ে ঝাপটে ধরেছে তোমায়।