আমার মেয়ে ও কাব্য
***********
বোধ অবিপন্ন বাবার ব্যাকুল মেয়ে
বচন বিমুখে বাবার হৃদয়ে আদরের অস্থিরতা
দ্বিধাপূর্ণতায় গল্প বলায় বাবার মন্দভাগ্য
অথচ শোনার অভিপ্রায় যথেষ্ঠ বেশি মেয়েটার
সোনামণির বয়স ছয় পেরিয়ে সাত
গল্প শোনার বয়সটাই বটে-

ঝুলিতে গল্পের অভাব নেই বাবার।
হাসি, উল্লাস ও প্রাণাবেগও প্রবল  
তবুও পারেনা, শোনানো হয়ে উঠে না
কোন এক পরাভূত কুৎসিত পতিবন্ধকতা
বাবার কন্ঠ নিবারিত করে চরম অসন্তোষে
আকাঙ্ক্ষা, মনস্তাপে বাবার মুখে স্থবিরতা।

মেয়েটার কত বায়না- বল, বাবা গল্প বল!
মূজ্যমান বাবা নিষ্প্রাণ লাশের মত তাকিয়ে
অবাক চাহুনিতে মেয়েটার দৃষ্টি বাবার মুখে
আকাঙ্ক্ষায় ভাবে এই বুঝি বাবার বলা শুরু
কিন্তু জরাগ্রস্থতায় বলতে পারেনা বাবা
পলক ফেলে ব্যাকুল মেয়ের নরম আকুতি
“বলোনা বাবা! একটা গল্প শোনাও!”
বাবার ঠোটে নিরর্থক কষ্টের হাসি
মেয়েটার নিষ্পাষ চোখ দুটো ছলছল
আধো শব্দে বলে- তুমি একটা পঁচা বাবা!

অবুঝ মেয়ে কি  বুঝতে পারে স্থবিরতার কষ্ট!
বাবা যে এক জীবন্ত লাশ হয়ে তার পাশে বসে
যে লাশ কথা বলে, মিটিমিটি হাসে, আদর করে
চলতে পারে, দেখতে পারে, শুনতেও পারে
নির্ভীকতায় শুধু পারে না তাকে গল্প শোনাতে
কষ্টের ফোটা ফোটা অশ্রু যেন সঞ্চিত আদর।


লেখা: ২৪.০২.২০২৩