অবতারণা
–-----------
কেমন করে পারছো তুমি!
কিভাবে কাটে তোমার দিন-রাত!
মনে কি পরে না আমায়!
কোন মূহুর্তে অজান্তে একটিবার।
এতটা নিষ্ঠুরতা ছিল কোথায়!
নির্জন অন্ধকারে যখন বসি একা
স্তব্দতা যখন গ্রাস করে চতুর্দিক
দূরের পাকা রাস্তার গাড়ির শব্দ
মনে হয় যেন তোমারই কলরব।
ঝিরঝির বৃষ্টির শিরশির শিহরণ
যেন তোমার হাতের স্পর্শ।
মৃদু বাতাসে বয়ে আসা মিষ্টি ঘ্রাণ
অনুভবে পাই তোমার শরীরের সুগন্ধ।
কি করে আছো তুমি এতটা দূরে!
মনে কি আসে না আমায়!
সেই ঝুরঝুরি ঝাল চানাচুর
এখনো কি তোমার খাওয়া হয়!
পাশে বসে আমার মুষ্টি তোমার মুখে
দূর থেকে দেখে ফেলা সন্তানের লজ্জায়
নিজেকে আড়াল করতে আমাকে ধমক
“কোন কাজ পারো না তুমি,
রং মাখা মশলায় কি রান্না হয়, বাজে গন্ধ।”
গন্ধের বাহানায় ওড়না চেপে লজ্জা ডাকা;
চানাচুরের প্যাকেটটা হয়ে যায় রান্নার মসলা।
কি করে কাটছে তোমার দিনগুলো!
অনেক ভাল! নাকি গুমোট কান্নায়!
একবারও কি ভাবনায় আসিনা আমি!
তোমার হাতের ছোট মাছের চটচটি
গরম ভাতে মেখে নিজেই দিতে মুখে পুরে
কি যে তৃপ্তি তোমার হাতের রান্নার স্বাদ!
আজও চোখে জল ঝরে যখন একা খেতে বসি।
তোমার হাতের কচু শাক, নোনতা ইলিশ ভুনা
চিংড়ি লাউ আর মসুর ডালের বাগারের গন্ধ
প্রতিটা ক্ষণ আমাকে কাঁদায়
স্বাদের উপরে তোমার মায়ায়।
এখনও কি ও-ই স্বাদ আসে তোমার রান্নায়!
কি করে পারছো বিরুদ্ধ যুদ্ধে মরতে ও মারতে!
দিনের পর মাস, বছর একা একা চলতে!
মনে কি আসেনা আমায় কোন এক মুহূর্তে!
চলে আসো, মনের ভুল ছেড়ে
বিশ্বাস রাখো তোমার সুখের সবক’টা বছরে
যেমন পেয়েছ আমায় আমি সত্যিই তাই
বাকি দিনগুলো তোমার মনের অবতারণা
গড়েছ নিজে নিয়ে অন্যের ভ্রান্ত ধারণা
আমিও হারিয়েছি বিশ্বাস, দেখে তোমার তাড়না
তবু অনেক ভালোবাসি
আমি ছাড়তে তোমায় পারবো না।
।।।।।।।।।।।।।