আমি না হয় ঘুম পাড়ানি দোলনা হয়ে, দোল
দিয়ে যাই, চেয়ে দেখা বয়ে চলা নদীর মত
ঢেউ খেলে যাই, কেউ রাখেনা খবর আমার, তাতে
কি আসে যায়। হোঁচট খেয়ে নখ ফেটে যায়
স্বপ্ন দেখে ঠোঁট কেটে যায়, লক্ষ মাইল হেটে
এসে ফুল শুকে যায়, ভরা নদীর জল শুকে যায়
ক্লান্ত মেঘের কান্না এসে, চোখ ভিজে যায়, কেঁপে
কেঁপে একলা বাঁশির সুর থেমে যায়, কেউ রাখেনা
খবর আমার, তাতে কি আসে যায়।
ঘাস মরে চর পড়ে যায়, ঘুণে পোকায় ঘর পড়ে
যায়, নতুন দিনে মেঘ ছেয়ে যায়, গলা ছিঁড়ে
গান গেয়ে যাই, বেদনা সিক্ত, নীল আকাশের তাঁরা
হয়ে, দূরে মিলে যাই, ক্লান্ত মাখা এই নিশি রাতে
ঝড় বয়ে যায়, আমি না হয় বুক ফুলিয়ে, কান্না
ভেজা দুঃখ ছুঁয়ে, লোনা জল মুছে যাই। তাঁরার বুকে
একলা ভাসি, ঘুম না আসা কালো রাতে, তোমার
সুখে চুম দিয়ে যাই, তোমায় কথা খুব মনে পড়ে যায়।
প্রিয় রইলে কেবল দূর সীমানায়, খোঁজ নিলে না আর
অবেলায়, যায় ডেকে যায়। মান অভিমানে সময়ের
স্মৃতি শুধু বয়ে যায়, কেউ রাখেনা খবর আমার
তাতে কি আসে যায়।
শ্যামল পৃথিবীর বুকে ক্ষণে ক্ষণে, ক্লান্তির ঢেউ এসে
যায়, পদ চিহ্ন মুছে দেয়ার উত্তালে, বান বয়ে যায়
জীবন গহীনের আওভানে যে যার মত, যায় ভেসে যায়
আমি না হয় ক্ষত বিক্ষত প্রসশ্ত বুকে, ঝড় সয়ে যাই
কেউ রাখেনা খবর আমার, তাতে কি আসে যায়।
না বলা কথাগুলো সব বলে যাই, পড়ে রবে বিরহে
পোড়া, স্মৃতির ছাই। নিঃসঙ্গতার সমস্ত দিন, তোমার তরে
বলি দিয়ে যাই, কেউ রাখেনা খবর আমার, তাতে
কি আসে যায়।
সৃষ্টি সুখের মাধুর্যে আজ না হয়, মন ভরে যাক
ক্ষয়ে যাওয়া মাটির পুতুল, তার না হয় মান পুড়ে
যাক, হৃদয়ের রক্তিম শৈবাল পথ ধরে, একা আমি হেটেই
যাব, সন্ধানী আলোর পথে, কূল না পাওয়া নিশি বিকেল একা
তরী বয়েই যাব, ফুলে ফুলে রং বদলে তোমার বাসর
আজ সাজাব নয়ন আলোয়, গোলাপ ছিটে রাঙা পায়, আমি মরব
কাটার ঘায়, কেউ রাখেনা খবর আমার, তাতে কি আসে যায়।
ফাল্গুনি হাওয়া হয়ে মনে দোল দিয়ে যাই, বেলি ফুলের সুবাস
মেখে চুম দিয়ে যাই, হাড় কাঁপা শীতের রাতে, ওম দিয়ে যাই
আয়ু কেটে তোমার ভাগে, দম দিয়ে যাই, একলা পথিক
পিছন দিকে, কেন চেয়ে রয়? কেউ রাখেনা খবর
আমার, তাতে কি আসে যায়।
যাওয়ার বেলা সব নিয়ে যাও, শূন্যে পাই তোমার দেখা
ক্ষণে ক্ষণে ঝড় হয়ে যাও, শুধু থাকে ধ্বংস লেখা।