পৃথিবী আজ বড্ড ধূসর,
আলো নেই আর কোথাও,
সকাল হয় না আর, নেই পাখির কাকলি ধ্বনি ।
নদী আজ ডুবে গেছে বালুচরে,
মাটি আজ শুধুই পাথর,
সব ফুল ঝরে গেছে, সব গাছ -
হয়ে গেছে কাঠ,
কচি ঘাস, মাঠ সব কিছু ধুলো ।
আকাশে জমে না আর মেঘ, আকাশ তবু কালো ।
খাদান থেকে উঠে গেছে কালোহীরে,
শুন্য সব গাঁয়ের চাঁপাকল,
ধরিত্রীর পেট চিরে তুলেছি, যেটুকু ছিল অবশিষ্ট ছিল জল ।
হায় পৃথিবী! তোর চেহারা আজ কি বিভৎস -
এই কী তুই?
ছিল কোটি কোটি প্রাণশক্তির উৎস ।
চেয়ে দেখ তোর চারিদিকে -
চেয়ে দেখ নগরীর প্রাচুর্য,
চেয়ে দেখ তোর সেই মানব-সন্তান,
হরপ্পা - মহেন্জোদারো - ব্যবীলন হয়ে অশোক - চন্দ্রগুপ্ত আরো কতো কিছু দেখেছিস তুই-
কত যুদ্ধ, কত আর্তনাদ, কত হাহাকার
আরো কত কিছু দেখা বাকি -
সব কিছু শেষ হয়ে গেলে তোর বুকে পড়ে থাকে ধূসর শিলালিপি,
এই সেই হোমো-স্যাপিয়েন্স- স্যপিয়েন্স-
জঙ্গল, গুহার জীবন থেকে শুরু করে -
আজ সে সভ্যতার এক চরম শিখরে ।
চেয়ে দেখ তোর সব বালি, মাটি, পাথর-
নদীতট-পাহাড় - জঙ্গল,
চেয়ে দেখ ইমারত-বস্তি আর নগর-নগরী,
মানুষ যেদিন প্রথম পৃথিবী দেখেছিল
ভোরের আলোয় প্রথম নর-নারীর
যেদিন প্রথম চোখাচোখি হলো,
সেদিন থেকে গ্লানি - হিংসা - স্বার্থপরতা
নাকি একটুও প্রেম - ভালোবাসা ছিল তাদের বুকে প্রথম সূর্যালোকে !
গাছ, পাখি, নদী সব কিছু ছিল ঠিকই সেদিন,
পাখির পাখনার মতো কোমলতা ছিল -
সব মানুষের বুকে একদিন ।
নরম ঘাসের মাঠে বসেছিল কখনো সেই নরনারী -
দেখেছিল একবার, সেই একবার!
দেখেছিল সেই চাঁদ, মাঠ, ধানক্ষেত, গভীর অরন্য, ভোরের শিউলি-শিশির -
অন্ধকারে উড়ে যাওয়া বাদুড়ের ধূসর ডানার মাঝে কেউ প্রেম খুঁজেছিল সেদিন-
সবকিছু ছিল পৃথিবীতে, ছিল কোনদিন ।