মেঠো গাঁয়ের এক মিয়া ভাই
পড়িলো দারুন প্যাচে,
ভিন শহরের এক বাবুসাব
আসিলো তাহার কাছে।
বেশভুষা তার বাহারী রঙের
অদ্ভুত তার ঝোলা ,
সরু কাপড়ে পা মোড়ানো
পেটটা অনেক ফোলা।
চোখ ডেকেছে কালো কাচেতে ,
হাতে কি যেন ঘোরে ,
বাবুসাব মোর যত কাছে আসে
আমি যায় তত দূরে।
আমারে বাবু জিজ্ঞাস করে,
বসতে কি আমি পারি ?
মাথা ঝাকিয়ে সাই দিয়ে তারে,
পিঁড়ি দিলাম তারাতারি।
খানিক বাদে বলেন বাবু
বিদ্যুৎ কি ঘরে আছে ?
ল্যাপটপটা মোর চার্জ করিতে হবে
বেলা ১২ টা বাজে।
কথা শুনিয়া বোবা হয়ে গেলাম,
বলিতে পারিনা কিছু ,
কি জানি এক, শব্দ শুনিয়া
মাথা করিলাম উচু।
বাবুসাব দেখি ছোট্ট একটা
বাকসো করিল বাহির ,
কানে লাগাইয়া ,কি জানি বুজিলো
কত কথা করিলো জাহির।
দেখিলাম বাবু রেগেমেগে আগুন,
অজানা আক্রোশে ,
বাকসো ধরা হাতখানা তার
তুলিল আকাশে।
আমার পানে তাকিয়া কহে ,
নেট কি গাঁয়ে নাই ?
কত কথা মোর রহিলো বাকী ,
তোমার ফোনটা দাওনা ভাই।
বলিলাম তারে , ফোন কারে কয় ,
কি বা তাহার কাজ ?
বিদ্যুৎ দেখে নাই তিন পুরুষে ,
কেমনে দিবেন চাচ।
বাবু কহিল ,একি কথা
বলোতো দেখি মিয়া ,
দুনিয়া কত আধুনিক হচ্ছে
দেখনা একবার গিয়া।
শহরে কত আরাম আয়েশ ,
চলে মোটর গাড়ী ,
দনিয়াটা তো হাতের মুঠোয়।
কত অট্টলিকা বাড়ী।
তুমি তো থাকো গহীন কোণে ,
জীর্ণ তোমার ঘর ,
এই জীবনের সার্থকতার
রাখ না খবর।
এদিকে আবার সন্ধ্যা নামলো
কিছুক্ষণ মাত্র হলো ,
বাবুসাব যেন , কাঁচের ভিতর
কি যানি দেখতে পেলো।
কুপি জ্বালিয়ে , আসিয়া দেখি
বাবুসাব উঠানে নাই ,
দূর থেকে শুধু ভেসে আশা
হুড়মুড় শব্দ পাই।
এগিয়ে দেখি , পাশের বাড়ীর
কালা কুত্তাটা ছোটচ্ছে,
তার আগেতে বাবুসাব
এলোমেলো পায়ে দোলছে।
ঝপাৎ করে ডোবায় পড়ে
বাবুসাব দিল ডুব ,
পারে দাঁড়াইয়া কালা কুত্তাটা
হাঁকডাক করিতেছে খুব।
কোনোরকম তারে পারে তোলিয়া,
তাকাইলাম তার পানে ,
কাতর স্বরে বলেন বাবু
মাইরোনা আমায় জানে।
হাতের মুঠোয় দনিয়া আপনার,
এখন কেন এত ভয় ?
জীবন সার্থক সংগ্রামের মাঝে
আরামায়েশে নয়।
সমাপ্ত