দিচ্ছে ভাষণ বসে নন্দ
মাইকে গলা ফাঁটিয়ে ,
দেশটা আমাকে বাঁচাতে হবে
দুর্নীতি সব ঝাঁটিয়ে।
এই করিবো ,ঐ করিবো
দেখ সবে ,শুধু চেয়ে ,
আর হবেনা জুলুম কোথাও ,
এই গেলাম আমি কয়ে।
চার দেয়ালে বসে নন্দ ,
করচ্ছে দেশের চিন্তা,
জনগণের নুন আনতে ,
ফুরিয়ে যাচ্ছে পান্তা।
বলিল লোকে, আহা নন্দ,
বসে আছো তো বেশ ,
দ্রব্য মূল্যের ঊর্ধ্বগতি ,
গরিবের আহার শেষ।
নন্দ বলিল , বাড়িতে দাও না ,
বাড়বে আর কতদিন ,
বিশ্বটাই আজ , মন্দা চলছে ,
ঠিক হবে একদিন।
নন্দের পাতে , ইলিশ ভাজা,
ভুনা করা , বড় রুই ,
খেতে ,খেতে বলে নন্দ ,
দেশে এতো, অভাব কই।
নদী ভাঙ্গনে ভেসে গেছে ,
লোকালয় , ফসলের মাঠ ,
নন্দ ঘুমায় , নরম বিছানায় ,
খানদানী তার খাট।
টিভির পর্দায় দেখে,দেখে
নন্দ হিসাব করে ,
মানুষ কত মারা গেল ,
গত দু-মাস ধরে।
মোবাইল ফোনে নন্দলাল ,
খানিক পরে ,পরে ,
তন্দুরী আর কাচ্চি বিরিয়ানী ,
আনতে বলে ঘরে।
সাথে আরও সালাত ,মিঠাই ,
ঠান্ডা কোমল পানি ,
আহা -কি আনন্দ , গানটা নন্দ
বাজায় অল্প খানি।
বানভাসি মানুষেরা
করিতেছে আহাজারী ,
বলিল লোকে ,যাও না নন্দ
গিয়ে, দেখ না তাদের বাড়ি।
বলিল নন্দ ,দেখ না তোমরা ,
চারিদিকে শুধু পানিতে থৈ , থৈ
দেখিতে যাব ,কি করে আমি,
আমার পা -দুটি রাখিবো কই ?
নৌকা নিয়ে ,না হয় গেলাম ,
ডুবে গেলে , কি হবে ?
তোমরা কি , একটু ভেবে দেখেছো ,
দেশটা কি আর রবে !
বাহির পানে হয় না নন্দ ,
পাছে , যদি কিছু হয় ,
রাস্তা ,ঘাটে , পথে –মাঠে
রয়েছে কত কিছুর ভয়।
পিঁপড়ার মত গাড়ি চলে ,
চলাচল করা দায় ,
চুরি , ডাকাতি , খুব বেড়েছে ,
প্রাণটা যদি যায়।
যে করেই হোক , বাঁচিতেই হবে ,
থাকিতে হইবে বেশ ,
তা , না হলে দেখিবে কে ?
এই অভাগা দেশ।