ওটা আমাদের কাবিননামা!
বয়সটা ওর বছর পাঁচেক;
দেনমোহরটাও ছিলো লাখ দশেক;
বাবা বলতেন- “বুঝলিরে মা,
ছেলে হিসেবে ও মন্দ নয়;
এমন বাজারে এমন ছেলে কজন মেলে?
কপাল গুনে তুই পেয়েছিস, নইলে-”
বাবা যে ওকে কেনো ভালো বলতেন- বুঝতাম না!
চাকরিটা ওর সরকারী, বেতনটাও মোটা অঙ্কের;
উচ্চতায় সাড়ে পাঁচ ফুট, মাথা ভর্তি ঘন চুল,
বলিষ্ঠ দেহের গড়ন, সুদর্শনই বটে-
কিন্তু স্বভাবটা যে আনাড়ি, মানুষটা যে মদ্যপ,
মদ্যপটা যে পশু, পশুটা যে ঘরে ফিরে
পশুত্ব জাহির করে অর্ধাঙ্গিনীর উপর
সেই সত্য আমি কাউকে বুঝতে দেই নি এতোদিন!
মধ্যবিত্ত ঘরের মেয়ে;
মা বলতেন- “শোন,
মেয়েদের সয়ে নিতে হয় অনেক কিছুই;
মানিয়ে নিতে হয়, মানাতে হয়;
বুকে পাথর চেপে হাসতে হয়,
হাসতে হাসতে পাথর চাপা কষ্টগুলো
পূবালী হাওয়ার মতো উড়িয়ে দিতে হয় আকাশে।”
একটা একটা করে, একটু একটু করে
কষ্টগুলো ফানুসের মতো উড়িয়েছি আর
দিনকে দিন ফুটো হওয়া বেলুনের মতো
ক্রমাগত গুটিয়েছি, গর্তমুখী হয়েছি।
অথচ- ভালোবাসা ছাড়া কিচ্ছু চাইনি আমি!
তবু মানিয়ে নিয়েছি,
দেখতে দেখতে কেটেছে বছর পাঁচেক!
ভালোবাসার বদলে পাওয়া প্রহসনগুলো
আজকাল বড় বিদ্রোহী হয়ে ওঠেছে দিনকে-দিন,
গোখরো সাপের মতো ফনা তুলে প্রতিবাদ করে
হিসেবের খাতায় পেতে চায় প্রাপ্য হিস্যা;
এটা ?
এটা আমাদের তালাক-নামা,
অনেক হয়েছে, আর না-
মানুষের সাথে হাঁটা যায়, চলা যায়,
কথা বলা চায়, এমনকি শোয়া-ও যায়-
পশুর সাথে ? না! কখ্খোনোই না।