রাজধানীতে কর্মব্যস্ত জীবন;
কাজ শেষে বাসায় ফিরতে কোনদিন সন্ধ্যা,
কোনদিন রাত।
সারি সারি বহুতল ভবন আর উড়াল সেতুর জন্য বিস্তৃত আকাশ দোখা যায় না।
কখনোবা চোখ পড়লে দেখি দীপ্তিহীন তাঁরা, ফ্যাকাসে চাঁদ।
রাস্তাগুলোয় দেখি সোডিয়াম, নিয়ন আর এল ই ডির ঝলমলে আলোর কৃত্রিমতা,
এখানে জ্যোৎস্না খুঁজে পাইনা;
বুঝিনা কবে অমাবস্যা, কবে পূর্ণিমা।
নগরের অস্বস্তিকর পরিবেশ আর ব্যস্ততার ক্লান্তি ভুলে যেতে মাঝে মাঝে গ্রামে অাসি।
আজ আবারো এসেছি-
বিকেল থেকেই দীঘির শানবাঁধানো ঘাটে বসা;
খোলা জায়গা, মৃদুমন্দ শীতল হাওয়া
টের পাইনি কখন বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা।
পুব আকাশে চোখ পড়তেই দেখি, রূপালি থালার মতো উদিত চাঁদ,
সত্যিই আজ পূর্ণিমা দেখছি!
দেখছি অপরূপ প্রকৃতির নয়নাভিরাম সাজ
তারা ঝলমলে আকাশ যেনো সুকন্যার গায়ে জড়ানো কাতান শাড়ীতে রূপার কাজ,
কপালে দীপ্তি ছড়ানো রূপার টিপ, মাথায় তাজ।
দীঘির কালো জলে চাঁদের অালোর বিকিরণ যেন ষোড়শীর গলায় সিতাহার জড়িয়ে রেখেছে!
কানে দুল, নাক ফুল, অঙ্গে অঙ্গে সুকন্যা যেন আজ রূপার গহনায় সেজেছে।
হঠাৎ হঠাৎ মেঘ এসে ঘোমটা পড়ায়
একটু বাদে আবার তা সরিয়ে দেয়
লাজুক সুকন্যা হাসি লুকাতে পারে না, জোছনা ছড়ায়।
নারিকেলের পাতার ফাঁকে সেই জোছনার কিরণ বাতাসে দীঘির জলে দোল খায়।
শিশির জমা ঘাসের ডগাগুলো চাঁদের কিরণে চিকচিক করে,
মনে হয় ষোড়শী রূপার মল পায়ে দিয়ে হেঁটে যায়।
দীঘির পাড়ের বাঁশ বাগানে বসেছে জ্যোৎস্নার মেলা
নির্ঘুম ডাহুকেরা জলে ভাসিয়েছে অভিসারের ভেলা।
সত্যিই প্রকৃতি আজ খেলছে এ কি রোমাঞ্চকর খেলা!
নিশাচরদের হাক ডাক কানে আসে, ভাঙে নিশিতের নিস্তব্ধতা
রাতের গভীরতার সাথে ষোড়শী পায় যৌবনের পূর্ণতা; বাড়ে উজ্জলতা, ছড়ায় স্নিগ্ধতা।
বিমুগ্ধ নয়নে দেখছি সুকন্যা তোমায়, দেখছি তোমার অপরূপ রূপের বন্যা
তাইতো আমি হারিয়ে যেতে চাই তোমার মাঝে;
ওগো ষোড়শী সুকন্যা, ও হে রূপসী পূর্ণিমা।।