আজকে যারা শহরে থেকে
গ্রামকে নিয়ে তুচ্ছ করে
কটাক্ষ করে প্রশ্ন করে
গাঁয়েতে আবার কিসের সুখ?
আমিও পাল্টা প্রশ্ন তুলে
জবাব চাব আজকে তাদের
কি করে বুঝেছো গাঁয়ের আনন্দ
কি করে বুঝেছো গাঁয়ের সুখ?
উঠেছো কখনো পাখির ডাকে
দেখেছো কখনো সূর্যোদয়,
চেয়েছো কখনো ঘাসের ডগায়
শিশির যেখানে মুক্তো হয়?
হেঁটেছো কখনো মেঠো পথ ধরে
ঘাস ফুল যেথা পায়ে দেয় চুমে,
লাজুকলতা ছুঁয়ে দেখেছো
শরমে কেমনে পড়ে সে নুয়ে?
দেখেছো কখনো ঝিলের মাঝে
ফুটে থাকা কোন পদ্ম ফুল,
তুলেছো কখনো শাপলা-শালুক
পেয়েছো কি তুমি তার সুখ?
ছুটেছো কখনো ফড়িং পাছে
লেজে সূতো বেঁধে উড়িয়ে তাকে,
দুলেছো কখনো দড়িতে বসে
ডাঙা পাড়ে থাকা হেলানো গাছে?
মেতেছো কখনো চঁড়ুইভাতিতে
ঘরে ঘরে থেকে চাল ডাল তুলে,
কেঁদেছো কখনো বোকামি করে
মিছে মিছে দিয়ে পুতুলের বিয়ে?
চড়েছো কখনো সুপারির খোলে
শিশুরা যা দিয়ে গাড়ি গাড়ি খেলে,
ভেলায় চড়ার ফুর্তি কি তুমি
পেয়েছো কখনো দীঘি জলে নেমে?
উড়িয়েছো ঘুড়ি খোলা মাঠে যেয়ে
লাটাই সূতা নিজ হাতে নিয়ে,
পেয়েছো কি মজা সাথীরা মিলে
কানামাছি, বৌচি, হাডুডু খেলে?
গিয়েছো কখনো মরা খাল বিলে
কৈ, পুঠি, শিং মাছ ধরিতে,
পেয়েছো কি মজা ঝাপাঝাপি করে
দল বেঁধে আবার নাইতে নেমে?
খেয়েছো কখনো ঢিলটি মেরে
পাকা আমটি নিজ হাতে পেড়ে,
লিচু, জাম, কুল, পেয়ারার স্বাদ
পেয়েছো কি তুমি গাছে চড়ে খেয়ে?
শীত সকালে খেজুর রসে
ভিজিয়েছো কি তুমি তোমার মুখ,
চুলা পাশে বসে পিঠা পুলি খাওয়া
পেয়েছো কি তুমি তার সুখ?
আরো যে কত সুখের কথা
লেখা আছে গাঁয়ের প্রতিটি পাতায়,
তাই কি করে জিজ্ঞেসিবো তোমায়
সুখের এত কথা এত ছোট খাতায়?
অবশেষে এসব প্রশ্নের পরে
আমিও বলি বিদ্রুপ করে-
ইট পথরের কীটের জীবনে
কি করে বুঝবে গাঁয়ের সুখ?