জীর্ণ কুঠির -
এক রজনীতে একাকী ছিলাম
হঠাৎ স্বপ্নতাড়িত মনটা চাঙ্গা হয়ে উঠলো
ঘুম আসেনা
বিছানা ছেড়ে লাইটটি জ্বালালাম
পড়ার টেবিলে চেয়ারে বসে
কিছু একটা লিখবো ভাবছিলাম
হঠাৎ এক ঝড়ের ধাক্কা লাগে দরজায়,
জীর্ণ কুঠিরটি উড়িয়ে গেল কোনখানে!
এখনও কর্ণ কুহরে বাজে ভয়ার্ত যার কম্পন
আগুনের ফুলকি লাগে চোখে
খোলা দরজাটি এতক্ষণে হয়ে গেছে নীরব
কেননা ঝড়ো বাতাস পূর্বেই দানবী তাণ্ডব ঘটিয়ে গেল
যা এখন আর নেই;

বাইরে চলে এলাম, দেখলাম
চারপাশের অট্টালিকা অবিকল রয়ে গেছে
দাম্ভিক অট্টালিকাগুলো আকাশ ফেটে উপরে উঠতে চায়
মাথাটা টন টন করে উপরে তাকালেই
জোছনা মাখা রাত স্পষ্ট দেখতে পায়
চাপা গলিপথ এঁকেবেঁকে চলে গেছে দূরে
তখন লাইট পোস্টের আলো নেই
নীরবে এক সিটি আরামে ঘুমায়;

মোড় ঘুরতেই দেখলাম রাজপথে
পড়ে আছে সদ্য এক মানুষের লাশ
পিচ ঢালা পথ রক্তাক্ত হয়ে গেছে
গায়ে শিহরণ বয়ে গেল
অন্য ফুটপাত ধরে হেঁটে গেলাম এক কিলো পথ
অদূরেই দেখা গেল এক বস্তি পাড়া
বস্তি পাড়ার মানুষেরা আকাশের নিচে
ক্ষুধার তাড়নায় হয়ে আছে জীর্ণশীর্ণ,
শিশুর কান্না শোনা যায়, কেউ ঘুমায়নি
তারই একপাশ দিয়ে অন্য রাস্তার পাশে
একটি টি-স্টল দেখতে পেলাম
আলোটি জ্বলছে টিপ টিপ করে
স্টলে বসতেই টেবিলে চা দিয়ে গেল
কাপটি হাতে নিয়ে চায়ে চুমুক ‍দিলাম;

জীবনে অনেক হাঁটলাম
ভিন্ন ভিন্ন দৃশ্য দেখলাম
কেউ ঘুমায় কেউ ঘুমায় না
স্বপ্নতাড়িত মনটা দাউদাউ করে উঠলো জ্বলে
আচ্ছা বলুনতো? মানুষ মানুষের মাঝে কেন হয় ব্যবধান?
এইতো এখনি কলমে লেখার সময়!