মশার জ্বালায় হয় না লেখা শেষ
যেমনি আমি ধরছি কলম -
ওরা যেন ধরছে যমের বেশ ।
দিচ্ছে কামড় পিঠে গালে ঘাড়ে
কেমন করে বুঝছে ওরা ছন্দ পেলাম ,
লিখতে গেলেই যাচ্ছে কামড় বেড়ে ।
শব্দ খুঁজে যেই না ধরি কলমখানা তুলে
অমনি মশা ঝাঁকে ঝাঁকে গায়ের ওপর পড়ে ;
ত্রাহি ত্রাহি করি আমি মরি মশার হুলে ।
রেগেমেগে কলমখানা ফেলে ব্যাট হাতে নিই
দিব্যি খেয়ে নির্ব্বংশ করব মশাকুলে ।
যেমনি ছাড়ি কলমখানা পালায় মশার দল
হা ভগবান ! এইটুকু মস্তিষ্কের বোঝার এমন বল -
আমায় করে দিশাহারা আশায় ঢালে জল
এইটুকু প্রাণী তবু বুঝতে পারে ছল ।
কয়েল জ্বেলে ভাবছি এবার ধ্বংস করব মশা
আগুন দিতে ধোঁয়ায় ভরে দূরে পালায় রক্তচোষা ।
যেই ভেবেছি দিলেম টাইট , অমনি ভোঁ ভোঁ কানে
দেখি উল্টো পথে আসছে মশা ধেয়ে আমার পানে ;
আর ও কয়েকখানি কয়েল দিলাম জ্বেলে ঘরে -
ধোঁয়ায় পরান ঝালাপালা তবু যদিবা মশা মরে ।
মশারা সব ধোঁয়ার ভয়ে ভাগল ঘরের থেকে
ধোঁয়ায় বসে যায় না লেখা ছন্দ গেল চুকে ,
আবার নেভাই কয়েল বসি জানলা দরজা খুলে
ধোঁয়া বেরোয়, ঢুকছে দেখি মশারা দলেদলে ।
ঠিক করলাম ডান হাতেতে করব লেখা শেষ
বাঁ হাত দিয়ে মারব মশা হোক না যতই ক্লেশ
লেখা শুরু হতে দেখি কনুই পরে মশা
রক্ত খেয়ে উড়তে নারে টইটম্বুর দশা ।
মারতে গেলে লাগবে হাতে নষ্ট হবে লেখা
গা গিরগির করছে দেখে বাঁ হাত না যায় রোখা ,
যেমনি দিলাম এক খানি ঘা কনুই পরে বেশ -
উড়ল মশা আমার হল লাঞ্ছনারই শেষ ।
ঘায়ের চোটে কাঁপল ডানহাত ভাঙল চায়ের কাপ
পড়ল চা খাতার পরে বাড়ায় মনস্তাপ ,
কবিতাটির শ্রাদ্ধ হল কিছুই যায় না পড়া
নজর এল মশা মশায় , লাল পেটটি নজরকাড়া ,
ইচ্ছে করে কামান দেগে ওড়াই বেটার মাথা
সত্যি হবে মশা মারতে কামান দাগার কথা ।