চাওয়া পাওয়া
বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায় (পুলক)


ইচ্ছে আমার তোমায় পাহাড় দেখাই
বললে তুমি আমি কেন, যাও না তুমি একাই,
কি বা আছে ঐ পাহাড়ে আর -
শুধু নুড়ি আর পাথরেরই সার ।
তার থেকে বেশ একটা নুড়ি পথের থেকে তুলে
রাখব তারে ঠাকুর সিংহাসনে, পুজব তারে চন্দন আর ফুলে ।
আমি বললেম এ তো সহজ, এটাও না হয় হবে
জীবনভর্‌ তুমি কি ঐ গন্ডিটাতেই রবে ?
দেখবে চলো ঐ পাহাড়ের অপার বিশালতা
ঈশ্বরেরই বিরাট রূপের কেমন প্রকাশ সেথা ।

ইচ্ছে আমার বাগান করি তোমার তরে প্রিয়ে
বললে তুমি কি ই বা হবে বাগানখানা নিয়ে,
তার থেকে বেশ বনের কিছু ফুল
এনে দিও গাঁথব মালা , করব কানের দুল ।
আমি বললেম বনের ফুল না হয় দেব এনে
পাইনি সময় বহুদিনের গোপন ইচ্ছে মনে ,
আপন শ্রমে তোমার লাগি বাগান দেব করে
ফুলগুলি সব ফুটবে সেথায় শুধুই তোমার তরে
ফিরবে যবে বিতান পরে সকাল সাঁঝে তুমি
ধন্য হবে ফুলগুলি সব তোমার চরণচুমি ।
আমি যদি যাই বা দূরে চিরদিনের তরে -
ফুলগুলি সব দেবে তোমায় আমার স্মৃতি ফিরে,
বললে তুমি ভালোবাসা গভীর যদি হয়
তাহলে আর ভুলে যাবার থাকবে নাকো ভয়।

সেদিন শুধাই ইচ্ছে করে ? যাবে কি সাগর তীরে ?
বললে তুমি ভাল্লাগে না ঘর থেকে যাই দূরে ,
এর থেকে বেশ চলো না গিয়ে নির্জনেতে বসি -
ঐ ঝিঁঝিঁ পোকার ডাকের মাঝে আজ পূর্ণিমারই নিশি ,
আমি বললেম সরল তুমি সহজ তোমার চাওয়া
এমনি যদি সহজ হত জীবন তরী বাওয়া
তবে কি আর মানুষগুলো মরত হতাশ হয়ে ?
বড় বড় ইচ্ছেগুলোর পাহাড় বয়ে বয়ে ,
চাওয়া পাওয়ার হিসেব কষে শুধুই জীবন ভর্‌
বোকার মতো করছে পাওয়ার খুশীটাকেও পর ।
বললে তুমি ছোট্ট এই জীবনটাকে রোজ কর উপভোগ
মিছিমিছি কিসের এত না পাওয়ার অভিযোগ !