এসেছে বৃষ্টি ঝাপসা দৃষ্টি চলছে খেলা সৃষ্টির ।
ধরণী সরসা নেই কো ভরসা থামে নিকো ছল অরিষ্টির ।।
আপন আবেগে পড়িতেছে বেগে আশা ধরায় প্রাণ কৃষ্টির ।
যা ছিল তপ্ত হবে সমাপ্ত এই ধরণীর অনিষ্টির ।।
মাঝে মাঝে মেঘে উঠিতেছে জেগে ঘোর কলরব ভরা ।
দেয় ঝলকানি বিদ্যুৎ হানি শত্রু নাশিতে ত্বরা ।।
বৃক্ষের তলে ভরে ফুল ফলে নাড়ায়েছে মাথা তার ।
ছোট যত ছেলে সেই ফল পেলে শেষ হবে আকাঙ্খার ।।
বৃষ্টিতে ভিজে ঐ ফেরে খুঁজে হারানো গরুটি কার ।
রাখালের ছেলে ভুলে আম তোলে লেশ নেই ভাবনার ।।
দুই ফেরীওলা করিতেছে শলা না পারে সহিতে ছাট্ ।
কোনো মা'র ছেলে রহিয়াছে স্কুলে তাকিতেছে তার বাট্ ।।
রেলিং এর ধারে মুখে হাসি ভ'রে দেখে ছেলে প ড়ে জল ।
মনে আছে সাধ খেলিবে অবাধ সাথে করে শিশু দল ।।
মা'য়ে ডেকে বলে ক্ষণ আসি খেলে ঐ ছেলেদের সাথে ।
ঐ তো ভিজেছে হাতে মাথা মোছে কাশে নাকি ওরা রাতে ।।
ভাবিছেন মা এ কি যন্ত্রণা কেমনে বোঝাই বাছা ।
কি যে ওরা খায় কি বা দেয় গায় প্রকৃতিতে মরা বাঁচা ।।
আমি যদি তোরে ছেড়ে দিই ওরে হবে নিমোনিয়া নির্ঘাত ।
মনে নেই বাবু হয়েছিলি কাবু জ্বরে সেইদিন সারারাত ।।
বলেন শিশুরে ওরা প'ড়ে নারে যায় নাকো কভু স্কুলে ।
বদমাস সব করে কলরব গাছের আম জাম তুলে ।।
সারাদিন আজ হয়ে গেছে কাজ ঘোষকাকুদের ঘরে ।
সিমেন্ট আর বালি হয়ে গেছে খালি বৃষ্টিতে গেছে ঝরে ।।
জল জমা পথে পড়েছে ব্যাঘাতে পরেছিল যারা জুতো ।
নিল হাতে তুলে লোকলাজ ভুলে পেল নাকো কোনো ছুতো ।।
পড়িয়াছে ব্যাজে পাছে প্যান্ট ভেজে রাস্তার জমা জলে ।
বড়বাবু ধেয়ে ব্যাঙ হেন গিয়ে লাফায়ে পড়িল খালে ।।
মুখখানি তার সদা থাকে ভার হাসি তার মহা শত্তুর ।
দেখে পড়া তার হাসে বার বার ছেলে সব মহা ধুত্তুর ।।
হলধর রায় ঝটপট ধায় বাবুরে ওঠাতে ধরে ।
সেও প'ড়ে আসি বসে পাশাপাশি মুখে বলে ও বাবারে ।।
ছাতা হাতে তার কাজে ঝাড়ুদার প'থে চলে রামাহারি ।
দেখিয়া সে দশা দিলেক ভরসা ওঠায় বাবুরে ধরি ।।
ঘৃণা ভরে চেয়ে বাবু চলে ধেয়ে প্যান্ট জামা গেছে ভিজে ।
মনে দুঃখ তার বলবে কি আর পয়সা খেয়েছে নিজে ।।
যে ঠিকাদার পেয়েছিল ভার রাস্তা মেরামতের ।
দশটি হাজার কড়কড়ে তার নিয়েছিল অসতের ।।
খেয়ে আছাড় হুঁস এসেছে বাছার মুখে সরে নাহি কথা ।
বিধাতার মার সওয়া বড় ভার বোঝাবে কারে এ ব্যথা।।
ক্ষণকাল পরে নিজে গেল ধরে বৃষ্টির খেলা শেষ ।
ধরণীর বুকে দিয়ে গেল ফুঁকে কোমল প্রাণের আবেশ ।।