আজ এ কি দশা বাংলা সাহিত্যের ? ভাটিয়ালি গান নিয়ে নতুন কিছু লিখব ভাবলাম কিন্তু কেউ এ বিষয়ে আমায় কিছু বলতে পারছে না। যাকে জিজ্ঞাসা করছি সে অন্যের দোহাই দিয়ে নিজেকে দোস মুক্ত রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করছে। ঠিক যেমন ভাবে ক্লাসের পিছনে র বেঞ্চে বসা ছেলেটি ভাবে না পারলে না পারব কি বা আসে যায় তাতে ? অথচ আমাদের মত এই নদীমাতৃক দেশে ভাটিয়ালি গান ই ছিল আমাদের সুখ দুঃখ হাসি কান্নার সঙ্গী। ভাটিয়ালি গান ই ছিল আমাদের আনন্দ ,শোক প্রকাশের একমাত্র আস্তানা। অথৈ নদীর মাঝে মাঝি আপন মনে গাইত এই গান নিজের দুঃখের কথা জানাত। নিজের প্রিয়জন দের কথা মনে করে হাসত ,কাঁদত। নদীর কাছে আবদার করত ঢেউ যেন না ওঠে নদী যেন শান্ত থাকে। আবার দুরন্ত নদীর কাছে ক্ষোভ প্রকাশ করত মাঝি এই ভাটিয়ালি গানের মাধ্যমে। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে আজ এই গান আমাদের কাছে অতীত হয়ে গেছে। আমরা জানি না কোন গুলি ভাটিয়ালি গান। অথচ 'আমায় ডুবাইলিরে আমায় ভাসাইলিরে ' আমাদের সবার মুখে ঘোরে। সবাই আজ যন্ত্র সভ্যতার সাথে তাল মিলিয়ে চলতে ব্যস্ত। তাই অতীতের কোন মূল্য বোধ হয় আমাদের কাছে নেই। অথচ আমরা গর্ব করে বলতে পারি ভাটিয়ালি আমাদের গান। আমাদের নদীর গান। কিন্তু এই মিথ্যা বড়াই করে কি লাভ যদি না আমরা তাকে জানি। কেবল মাত্র ইউ টিউব এ কয়েকখানা গান পাওয়া গেলেই কি বাঙালি জাতির কাছে পুরো ভাটিয়ালি গান পাওয়া হয়ে গেল। যদি না আমরা তার সাথে একাত্ম হতে পারি। তাকে আপন করে না নিতে পারি। কি লাভ ভাটিয়ালি কে নিজের বলে মিত্থ্যা অহংকার করে? আমরা তো তরুণ আমরা যন্ত্র সভ্যতার যুগে তৈরী এক টা মেশিন কিন্তু আমার বয় জেষ্ট যারা আছেন , তারা তো আর যন্ত্র সভ্যতার সর্বগ্রাসী মেশিন নয়। নাকি ষাট সত্তরে পা দিয়ে তারা ভুলে গেছেন তাদের যৌবনের কথা ,তাদের শৈশবের কথা। যখন তাদের মনোরঞ্জনের একমাত্র ঠিকানা ছিল বাউল ,ভাটিয়ালি। তবে তারা কেন আজ কেউ এগিয়ে এলো না ? নাকি বয়সের ভারে ভারাক্রান্ত মানুষ গুলো ভুলে গেছে সব। নাকি শেষে র এই কয়েক টা দিন জীবনে আনন্দ করে কাটিয়ে দিতে যান। নানা রং বেরঙের চোখ ঝলসানো ছবির খপ্পরে পড়ে গুগল আর ইউ টিউব নিয়ে মেতে উঠেছেন যুবসমাজের সাথে তালে তাল মিলিয়ে। আর আমাদের কে ইশারা করছেন সেই পথে চলতে। না হলে নিজের গ্রাম কে গ্রামের মানুষ কে জানতে হলে আজ আমায় সাহায্য নিতে হয় গুগলের। আমরা বাঙালিরা নাকি সাহিত্য টা খুব ভালো বুঝি আজ হাড়ে হাড়ে তার নমুনা পেলাম। আমরা সবাই কি মুখে রং মেখে সং সেজে ঘুরছি। একজন ও কি নেই যে কিনা এই মেকি সভ্যতার হাত থেকে আমাদের কে ,আমাদের সাহিত্য কে বাঁচাতে পারে ?
আলোচনাটি ৮৮৯ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের সময়: ২২/০২/২০১৬, ০৭:৪২ মি: