জীবন কে ভালোবেসে মানুষ চলে যায় শেষে
কোনো এক আনকোরা না ফেরার দেশে,
নক্ষত্রের বেশে হয়ত প্রজ্জ্বলিত হয় সুদূর আকাশে।
শেষ অবকাশ মিটে যায় স্বাদ, মেটে দায়
অন্তিম অভিপ্রায় জীবনের সর্বশেষ শোভা যাত্রায়।
জীবনের বিপন্নতা,বিচ্ছেদের বেদনা,প্রাপ্তির প্রত্যাশা
অসংখ্য আশা, অনুরাগ কিংবা ভালোবাসা।
অপ্রাপ্তির হতাশা, ক্লেশ,আঘাতের অশেষ যন্ত্রনা
স্বার্থপরতা, হিংসা, দ্বন্দ্ব,বিবাদ কিংবা প্রতারণা।
অপাত্য স্নেহ,আদর অকৃত্রিম বাৎসল্য প্রীতি
সখ্যতা,আবেগ, বন্ধুত্বের উচ্ছ্বসিত অম্লান স্মৃতি।
নাম, যশ, জৌলুস,বৈভব,যত সুখ্যাতি
মৃত্যুতেই সব ইতি,অবসান,সর্ব নিষ্কৃতি।
মৃত্যুই শেষ মুক্তি, জীবনের চির সমাপ্তি।
আত্মীয়তা,সখ্যতা, নিবিড়তার সুদৃঢ় বন্ধন
প্রিয় মানুষ, হৃদ্যতা,অন্তরঙ্গতা যত আপন জন।
মৃত্যুতেই নির্বাহ মৃত্যুতেই সর্ব সমাপন।
ক্রমান্বয়ে সকলেই ধাবিত হবে স্মৃতির ভীড়ে
পঞ্চভূতে বিলীন হবে দেহ শাশ্বত মৃত্যুর নীড়ে।
হঠাৎ মৃত্যু এসে কেড়ে নেবে শেষ অধিকার
সকল তেজ, দম্ভ, শৌর্য,বীর্য আত্ম অহংকার।
সুবৃহৎ অট্টালিকা স্বীয় হস্তে সুসজ্জিত গৃহ
আপ্তীয় পরিজন যত আপন জন রহিবে না কেহ।
লুক্কায়িত সম্পদ,ব্যবসা বাণিজ্য,সঞ্চিত অর্থ
কাম,ক্রোধ,লোভ লালসা, মৃত্যুতেই পরিসমাপ্ত।
এক বিচিত্র বিপন্ন বিস্ময় এ মানব জীবন
এক চির প্রবাহী সুদীর্ঘ নদীর মতন।
জোয়ার ভাটার ন্যায় কেবলই উত্থান আর পতন
মৃত্যুরুপী মোহনাতে যার চির সমাপন।
যতদিন না আসে মরন করতে হবে বরন,
দুঃখের অভিঘাত আসবে আঘাত কিংবা প্রত্যাঘাত।
আসবে গ্লানি সীমাহীন বিষাদ কখন বা অবসাদ।
ক্রমান্বয়ে চলে যাবে সকলে অবিনশ্বর মৃত্যুর কবলে
কেউ পড়ন্ত বিকেলে কেউ বা প্রত্যুষে অকালে।
ঝড়ে পড়া প্রস্ফুটিত শিউলি ফুলের মতন বৃক্ষতলে।
মৃত্যু এসে ছিনিয়ে নেবে শেষে প্রিয় এ জীবন
তীব্র থাবায় প্রকাণ্ড এক কপোতারি লুন্ঠকের মতন।
কোনো এক দিবসে আমরাও চলে যাবো শেষে
ঐ আকাশের তারা হয়ে না ফেরার দেশে।
তবুও যত দিন আছো যদি বাঁচো মানুষের তরে
মৃত্যুহীন কৃতিত্ব হয়ে রহিবে সকলের অন্তরে।
কর্মে বা নিজ গুনে আত্মত্যাগ অথবা বলিদানে
স্বকীয় সৃষ্টি,নুতন আবিষ্কার বা অভিনব সৃজনে।
যারা শাশ্বত,মৃত্যুহীন,চিরস্থায়ী হৃদয়ের আসনে
তারাই তো মৃত্যুঞ্জয় এই অঘোম মৃত্যুর শাসনে।
অবিনশ্বর আজও তারা স্বরণে, মননে ও জীবনে।