স্বাধীনতা, একাত্তরে,
মার্চের কোন এক ভোরে,
খোকন সোনার মতো,
তোমার জন্মটাও ছিলো মাতৃগর্ভে রেখে ক্ষত।
প্রতিটি জন্ম যেমন মায়ের জড়ায়ু ছিড়ে
হয়ে ওঠে পুবা’কাশের প্লাবিত লাল ভোর।
তোমার জন্মেও তেমনি রক্ত প্লাবিত ছিলো
জগন্নাথ হল থেকে সদরঘাট, টিকাটুলির মোড়।
সে জন্ম ক্ষণে দুর্যোগের গন্ধের সাথে ছিলো প্রস্তুতিও
অবরোধ, হরতাল, মিছিল, মিটিং নামের।
সাহস দিয়েছিলো সাহসী মহান পিতা
দিয়েছিলেন ডাক, এবারের সংগ্রাম, স্বাধীনতার সংগ্রামের।
বিশ লক্ষ বিদ্রোহী, ষাট লক্ষ্ চির ঘুমন্ত চোখ
বৈঠা, লাঙল, নিড়ানি, কোদাল ছেড়ে
ধরেছিলো বন্দুক, রাইফেল
ভুলেছিলে মৃত্যুরে।
ছিলো না কি? ছিলোইবা না কারা?
পাঠান,শেখ, বৈষ্ণব, শূদ্র, কায়স্থরা।
কলম ছেড়ে রাইফেল, কবিতা রেখে কামান
হে স্বাধীনতা ছিলো কি অন্য কিছু, তোমার তৃষ্ণার সমান?
সেই তুমি কৈশরে জানো পতাকা দিয়েছো কারে?
শকুনের মতো তোমায় খামচে ধরা আলবদর, রাজাকারে!
একি ঔদাসীন্য নাকি ভুলের মতো অভুল?
অস্তিত্ত্বকে অস্বীকার নাকি প্রতারণা নির্ভুল?
স্বাধীনতা আমার, স্বাধীনতা আমাদের, আমরাই কেবল’র পক্ষের
তোমায় নিয়ে একই তর্ক একবার দুইবার বারংবার
হে অনন্ত চোখ খোল, দৃষ্টি মেলে দেখ
যৌবনে তোমার লেগেছে আগুন, পুড়ে হচ্ছে ছাড়খার।
ঔদাসীন্য সেই, যেন কারো দায়িত্ব নেই।
ছাব্বিশ লক্ষ বেকার আর চৌদ্দ কোটি ক্ষুধার্ত পেটের!
স্বাধীনতা এখনো তুমি সিংহ কিংবা বাঘের
স্বাধীনতা তুমি পারোনি হতে শালিকের!
চেয়ে দেখো গণতন্ত্রের আর সমাজতন্ত্রের আব্রু
পড়েছে খসে তোমার লজ্জাস্থান থেকে
হে পবিত্র, যে যৌবনা, আমার আরাধ্য স্বাধীনতা
জাগরিত হও, গর্জে ওঠ; মরতে চাইনে তোমার এমন দীনতা দেখে!