আমি ধর্ষিতা, আমি এখন মৃত।
আসামি পলাতক, হল না আজও ধৃত।
এদেশে এমনই হয়, ংদলের লোক পাবে ছাড়,
অসহায় গরিবদের পথ নেই পালাবার।
থানা আছে, পুলিশ আছে, বল নেই শাসনে;
পুলিশ ওঠে-বসে নেতা-নেত্রীর ভাষণে।
আমি হলাম দরিদ্র এক কৃষকের কন্যা,
রূপে গুণে ছিলাম নাকি অপরূপা অনন্যা।
বলত লোকে- এই মেয়েটা মস্ত বড় হবে,
বাবা-মায়ের দুঃখ-কষ্ট তখন না রবে।
আমারও মনে সাধ ছিল পড়াশুনা করে,
বিদেশে দেব পাড়ি উড়োজাহাজ চড়ে।
তখন কি আর জানতাম, এ অভাগা দেশে
স্বপ্ন শুধু স্বপ্নই থাকে স্বপ্নের বেশে!
স্কুল থেকে ফেরার পথে একাকিনী পেয়ে
ক্ষুধার্ত এক মানবপশু অমনি এল ধেয়ে।
প্রাণ পণে ছুটছি তখন ভয়ানক ত্রাসে,
তবুও ধরা পরতে হল কামুকের গ্রাসে।
'হাতে ধরি পায়ে পরি আমাকে দিন ছেড়ে'-
শুনল না সে;গায়ের জোরে সতীত্ব নিল কেড়ে।
জনহীন প্রান্তরে শুনল না মোর আর্তনাদ কেউ
বয়ে গেল চোখের জল আর তাজা রক্তের ঢেউ।
সংজ্ঞাহীন বস্ত্রহীন পরেছিলাম মাঠে
জানি না এভাবে ঠিক কতক্ষণ কাটে।
জ্ঞান ফিরলে চেয়ে দেখি শিয়রের কাছে,
হাসপাতালের বেডের পাশে,মা বসে আছে।
দিন-দুই ছিলাম বেঁচে প্রায় অনশনে
তৃতীয় দিন গত হলাম বিষ ইনজেকশনে।
আমি নাকি বাঁচলে পরে আসামির ক্ষতি,
এভাবে তাই লেখা হল আমার নিয়তি!
মৃত্যুর পর শুরু হল রাজনীতির খেলা
এখানে সভা ওখানে সভা হচ্ছে দুবেলা।
'ধর্ষকের ফাঁসি চাই' -সকলের এক দাবি;
সত্যি বড় বিচিত্র দেশ! অবাক হয়ে ভাবি।
এথায় ধর্ম নিয়ে রাজনীতি হয়, মৃত্যু নিয়েও তাই
ভুল করেও না যেন আর এদেশে জন্মাই।