অহঙ্কার, এক অদ্ভুত শক্তি,
মনে গড়ে তোলে এক মৃগয়া সিংহাসনে,
যেন পৃথিবীটা তারই। কখনও মনে হয়,
পৃথিবী বাঁকানো যায় চিত্ত  অঙ্গুলি হেলনে।  
জীবনটা পাষাণ হয়,তার শিরে ত্যজের ভারে।
এক অদৃশ্য শূন্যতা মনের গভীরে ক্ষত তৈরি করে।

আভিজাত্য অদৃশ্য, দৃশ্যমান হলেই রাবণের সাম্রাজ্য হয়।
ধংস চায় অজান্তে,লেলিহান জাগে,দম্ভ যেন চিরকালীন হতে চায়,
কিন্তু এর পরও—যতই গর্বে নিজেকে পূর্ণ করি না কেন—হৃদয়ের গভীরে এক নিঃসঙ্গতা আর অন্ধকার ভর করে।
ঘুম পাড়ানি মাসিপিসির গান,কোকিল ডাকলে ব্যঙ্গ করে কুহু কুহু, সব কিছু হেরে যায় ওপারে,বদমেজাজ আর গায়ের জোরে।

মন যখন অহঙ্কারে আচ্ছন্ন হয়,তখন সে ভালোবাসাকে ভুলে যায়।
সত্যিকারের শক্তি তার মধ্যে কোথাও লুকিয়ে থাকে,সে তখন ভুলে যায়।
যেখানে অহঙ্কারের ছায়া নেই,আভিজাত্য যখন আত্মপ্রকাশ করে, তখন মানুষ শুধু তার নিজের প্রতিচ্ছবিতে হারিয়ে যায়।
তবে এক সময় সে বুঝতে পারে,
এই অহঙ্কারী সিংহাসনে বসে থাকা মানুষটি আসলে একাকী। আভিজাত্য, গর্ব—এসব বাহ্যিক, যা একসময় ভেঙে পড়ে।
মনের অন্ধকারে হারিয়ে যায় সুখের সব রং। মনে হয়, যতই বড় হই না কেন, এই শূন্যতা থেকে মুক্তি পাবো না, যতই ধরো সং।

যতক্ষণ না মানুষ নিজের ভিতরে ঢুকতে পারে, যতক্ষণ না সে তার অহঙ্কার রুদে শিকল ছিঁড়ে।
ততক্ষণ পর্যন্ত এই অন্ধকার তাকে ঘিরেই থাকবে।
যদি কোনোদিন সে সত্যিকারের আলো খুঁজে পাবে,
সেদিন সে বুঝতে পারে যে অহঙ্কারের কাছে -'পতনের চেয়ে বড় কিছু নেই', হয়তো তবেই অন্ধকারের শেষে আলোর পথে  হাঁটতে শুরু করবে।