নোনা জলে ভিজে যাওয়া ঝাপসা চোখের দৃষ্টি,
এড়িয়ে যায়নি সেই ইলশে গুড়ির বৃষ্টি  
আগুনের গোলার মতো গরম হয়েও ঠান্ডা নিয়েছো আবার,
তোমার প্রতিশোধের দীপ্ত কণ্ঠে শুনেছি ক্ষোভের ভাষা,
কিছুই করতে পারিনি —শুধুই সান্ত্বনার নিঃশ্বাসে ভেজা আশ্বাসটা।

ব্রহ্মতালু থেকে পায়ের নখ পর্যন্ত ভেঙে যাওয়ার চুরমুর  শব্দ,
পঞ্চাশ মাইল দূরে থেকেও শুনেছি স্পষ্ট
ক্ষত হৃদয়ের কম্পিত ঠোঁটে গুলিয়ে যাওয়া কথা শুনে স্তম্ভিত যখন,
দুরভাষ হাতে ভরসার মায়া ছাড়া আর কিছুই নেই তখন।

গলা পর্যন্ত ব্যথার সমুদ্রে  হারিয়ে গেছো গভীরতায়,
ছোট ডিঙ্গা নিয়ে ভেসে গেছি তোমার খোঁজে,
নিঃসঙ্গ ঢেউয়ে প্রতিধ্বনি হয়ে খুঁজেছি তোমার প্রতিচ্ছবি,
ভাঙা নৌকোয় ভেসে চলেছি তোমার তীরের আশায়,
তোমার মুছে যাওয়া পদচিহ্নের দিকে ছুটে গেছি নির্ভীক

নকনকে লতানো গাছে আমার এই বৃথা আশ্বাস,
জানি, তুমি নুইয়ে পরেও ফিরে দাঁড়াবে দুরন্তে।
দূরে থেকে, অশরীরী আত্মার বেশে
তোমার দরজার পাশে নীরবে দাঁড়িয়েছি,
কালো রাতের ছায়ায় যেনো অদৃশ্য ছুঁয়েছি।

তোমার কোমল কণ্ঠে আজ মৃদু প্রতিবাদের প্রতিধ্বনি,
আস্থার মাটিতে পা গেঁথে দাঁড়িয়েছো দৃঢ়তার ঐশ্বর্যে।
তবু আমি ছিলাম দূরে, অদৃশ্য সত্তার বেশে—
তোমার পাশে দাঁড়ানো এক নীরব প্রহরী।
ছাড়বে না পথ, যতই ঝড় আসুক, জানি—
তোমার বিশ্বাসের মাটিতে তুমি অটল, তুমি অবিচল।

কাজল ভেজা নোনা জলে মিশে গেছে ফুটন্ত রক্তের দাগ,
দূরে দাঁড়িয়ে আমি দেখেছি সেই সাহসের অভিজ্ঞান।
জানি তুমি পারবে, নিজের স্বপ্নের চূড়ায়,
অশরীরী ছায়ায় আজও আছি পাশে,
হাত বাড়িয়ে  অবিচল
তোমার পথ চলার প্রত্যেক পদক্ষেপে,
আমার শেষ নিশ্বাস পর্যন্ত থাকবে আমার সেই নীরব সঙ্গ।