বহুদিন পর – জাগে হৃদয়ে পুবের তামান্না,
মজলুম তরে আর নয় অশ্রু-তাপ কান্না!
খিলাফত নেই তবুও যেন আশার প্রদীপ হেরি
বসিয়া আছি অবিরাম তবে কেন এতো দেরি?
আজ হতে তা প্রায় সাড়ে চৌদ্দ'শ বছর আগে–
এলেন তিনি তপ্ত ধরায় মানব প্রেমের অনুরাগে!
তখনও কেহ জানিতো না কভু সত্যতার সংজ্ঞা
গাহিয়া গান মানব মহান বহিয়া দিলেন গঙ্গা।
বিশ্ব যেন চিনিতে লাগিলো খোদার হাবিব তিনি
ইস্কে পাগল খোদ খোদা পাঠিয়েছেন তাকে যিনি!
কুদরতে তার ভরে গেলো ধরা দিকে দিকে ইসলাম,
কালেমা আর তাওহীদ যেন ছুটিছে অবিরাম!
তারপর কতগুলো দিন – অবিশ্রাম চলেছে সময়,
জানি নে কখন শত্রু শিবির ঘটিয়েছে তার প্রণয়।
ছেয়ে গেছে ধরা বসুমতী আজ জাহেল হয়েছে ফের
ঘুমন্ত জাতি উঠেনি এখনো অবরুদ্ধ অতীতের।
কোথা ইনসাফ? ফের আফসোস! দু'য়ের যাঁতাকলে
আয়েশি ভাব এখনো কাটেনি ছল-ছলনার ছলে।
এমনি সময় বিশ্বের মুসলিম মার খায় শুধু,
পায় না পথ নেই মনোরথ সম্মুখে মরুর ধূ-ধূ!
নিরাশার মেঘে ঢেকে গেছে ঐ আশার প্রদীপ খানি
অস্ত গেছে সত্যের রবি টানিয়া গ্লানির ঘানি।
উমর, আলী, খালেদের মতো সাচ্চা বীরের জাত!
বদ্ধ ফাঁদে পড়িয়া কাঁদে ক্ষণে ক্ষণে মোনাজাত।
জালিমের বিচার দুনিয়ায় নয়! জাহান্নামে যদি হয় –
সৃষ্টির আগে কিয়ামত দাও ওগো দয়াময়!
চাই না কোনো আনসারী কিংবা মেহেদী ঈসা
হুকুমের দাস চিরকেলে যারা পায়নি আজও দিশা!
আজানের ধ্বনি থেমে থেমে যায় জুলুমে মগ্ন পীর
আঁধার নামিলো মমতার দিলে রোনা-রোল ধরনীর,
শোনা যায় ঐ দিগন্তে! ঐ দিগন্তে মজলুম একা বসে
দিন গুনিতে বেহুঁশ হয়ে খোদার বিধান চষে।
আরশ বুঝি আজও থির করেনি এখনো থরথর!
ধর্ম রে বেঁচে হর্ম্য সাজায়, আসমানে ওকি গড়গড়!
বাজে মন্দ্র-নাদ হুঙ্কারে যতো পিশাচের দল ছিলো,
রক্ত পিয়াসা-তিয়াসা জালিমের সাথ দিলো।
আফসোস ঘিরে রাখে ফিরে আসে কালে কালে
হা হুতাশ চলে রাজ্যময় ত্রাস সঞ্চার হয় ভালে।
মালেকুল মৌত এসেছিলো যেদিন নিয়েছে শত প্রাণ!
কিন্তু সেদিনও হলো না অধীনে জালিমের অবসান।
তবে কি এমনি করে সয়ে যাবে যাতনা দুখীর দল?
চোখের জলে বুক ভাসে যে বিক্ষত পা করে টলমল।
বুকের ভিতর তাজা ঘা বিষ ঢেলে উঠে জ্বলে,
মরণ কেন মোদেরও হয় না এই নীল দরিয়ার জলে?
মৃত্যু নেই! মালেকুল মৌত! সেও নিয়েছে ছুটি!
জুলুমের সঙে লড়াই শেষে তলোয়ার গেছে টুটি!
রণ দামামা বেজে উঠেছিলো যবে সেই কবে গেছে তা
শহীদের রক্ত বিবর্ণ হয়ে আজ ভীতি লজ্জা রহে সেথা!
যদি দুনিয়ার মাঝে সকল গ্লানির নাহি ঘটাও ইতি
তবে ধ্বংস দিয়ে দূর করে দাও জীবন-মরণ ভীতি।
দুখীর কান্না বেজে যাক তবে শিঙার মহা হুঙ্কার,
আকাশে বাতাসে বজ্র সে ধ্বনি আল্লাহু আকবার!