বিশ ঘন্টার তুমুল ব্যস্ততার পর আংশিক বিশ্রামে আপাত শান্ত শহরের ষ্টেশন
হাঁক ডাকের চালচিত্রে অনেকটাই ভাটা, ক্যালন্ডারের শেষ ট্রেন ছেড়ে গেছে
যাদের নিয়ে বিশ ঘণ্টা কাটিয়েছে তারা নেই, আনাগোনা বেড়েছে নতুনের
এরা আসে এখানে, নৈতিক অনৈতিক নানা কাজে, রোজগারে, রাত গভীরে
কেউ টলমল পায়ে, সস্তার লিপিস্টিক পাউডারে, রঙিন চপ্পলে ঝলমলে পোশাকে
কখনো একা অথবা তিন চার জনের দলে, হয়ত নিস্প্রভ গ্রাম থেকে শহরের ষ্টেশনে
রেল সুরক্ষা বাহিনীর নজর এড়িয়ে অথবা সু-ব্যবস্থায় মাত্র ঘণ্টা চারেকের রাজ
শেষ ট্রেন ফেল করে অথবা ভোরের কাজে এসে শুয়ে বসে থাকা যাত্রীর জুতো,
প্লাস্টিক শীট, খবরের কাগজ নিমেষে হাওয়া, ঘুম ঘোরে পাশ ফিরলে, অসতর্কতায়
ছোট ছোট জটলায় বেচা কেনার বাজার চত্তর জুড়ে, ভিতরে বাইরে আলো আঁধারে
ঘড় ঘড়ে মেশিনে ষ্টেশন ধোলাইয়ের কাজ, বিশ ঘণ্টার ময়লা সাফাই কম নয়
আবার বইতে হবে ভার লক্ষ জনতার, কর্ম তালিকায় নেই কোন ছুটির সংরক্ষণ।
আপাত নির্জন পাথুরে শরীর প্রান্তে মুখোমুখি কিশোর ভবঘুরের দল মাতে উচ্ছ্বাসে
সুস্থ মনে অনৈতিক মনে হলেও নির্বিবাদে ছড়িয়ে যায় তৃপ্তির হাসি প্রতিটি উষ্ণ নিঃশ্বাসে
স্তূপীকৃত ভোরের কাগজ নিয়ে দাঁড়ায় এসে সারদিয়ে গাড়ী, গন্তব্যে পৌঁছাবে প্রথম ট্রেনে
শহরতলিতে বা আরো অনেক দূরে কোন বাজারে, সাইকেলে রোদ্দুর পেখম মেলার আগে
তীক্ষ্ণ বাঁশি বাজিয়ে একে একে ছেড়ে যায় দিনের প্রথম ট্রেন আগামী বিশ ঘণ্টার চেনা ছকে
বদলে যায় স্টেশনের রূপ নতুন মানুষে, টিকেট জানালা খুলে যায় সদ্য ঘুম ভাঙা চোখে ।
সোনারপুর
১৮/০৩/২০২২